হরিপুর (ঠাকুরগাঁও) সীমান্ত থেকে: কেউ মেয়ের জন্য কাপড় কেউবা বাবার জন্য খাবার নিয়ে এসেছেন বহু পথ পাড়ি দিয়ে। ওপারে থাকা ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন রানিশংকৈলের ডা.সেমন্ত রায়।
শুক্রবার (০২ ডিসেম্বর) ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলা টেংরিয়া গোবিন্দপুর এলাকায় কুলিক নদীর তীরে চাপাসাড় সীমান্তে এ দৃশ্য চোখে পড়েছে।
হরিপুরের ভাতুরিয়া ইউনিয়নের টেংরিয়া গোবিন্দপুর জামরকালি (পাথরকালি) জিওপূজা উপলক্ষে প্রতি বছরই দু’দেশের সীমান্তবর্তী মানুষের ভিড় জমে এখানে। কাঁটাতারের দু’পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ মেলে অনেকের।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার নাগর নদের পারে কোচল এবং চাপাসাড় সীমান্তে ৬৮ পিলালের পাশ ঘেঁষে ৩৪৬ পিলার পর্যন্ত সীমান্তের দু ধারে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বসেছিলো দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা। ক্ষণিকের সময় হলেও দীর্ঘদিন পর দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হয়। দীর্ঘদিন পর দেখা হওয়ায় অনেকেই আলাপচারিতা শেষে বিদায় বেলায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ভোর থেকে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে কয়েক হাজার বাংলাদেশি-ভারতীয় আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে ভিড় করে হরিপুর উপজেলার নাগর নদীর পারে কোচল এবং চাপাসাড় সীমান্তে এসেছে। সেখানে বসেছে বিভিন্ন অস্থায়ী খাবারের দোকান। কেউ কেউ বাড়ি থেকে খাবার রান্না করে এনেছেন।
সকাল ১১টার দিকে দুই বাংলার মিলন মেলার অনুমতি দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই মিলন মেলায় দুই বাংলার হাজারো মানুষ মিলিত হয়ে কথা বলেন।
হরিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুরল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হরিপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পাকিস্তান-ভারত বিভক্তির আগে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধীনে ছিল। এ কারণে দেশ ভাগের পর আত্মীয় স্বজনেরা দুই দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই সারা বছর এদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে পারেন না। অপেক্ষা করে থাকেন পাথর কালীর মেলার জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৬
পিসি/