ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে অধিদপ্তরে রূপান্তরের আহ্বান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৬
প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে অধিদপ্তরে রূপান্তরের আহ্বান ছবি: রানা-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরে রূপান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।

ঢাকা: প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরে রূপান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।

শনিবার (০৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস-২০১৬ উদযাপন উপলক্ষে ‘প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়নে চাই প্রতিনিধিত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

প্রতিবন্ধী নাগরিক সংগঠনের পরিষদ (পিএনএসপি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, পিএনএসপি’র সভাপতি বাকপ্রতিবন্ধী এম ওসমান খলিদ। আলোচনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আলী আহসান, পিএনএসপি’র  সাধারণ সম্পাদক সালমা মাহবুব, পরিচালক রফিক জামান প্রমুখ। আলোচনা শেষে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পরিবেশনায় কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।

২০১০ সালের ২ এপ্রিল অটিজম দিবসের আলোচনায় প্রধানমনন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরের ঘোষণা দেন। এরপর ২০১০ সালের আগস্ট মাসে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তরে রূপান্তরিত করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন দেয়। এরপর ২০১৪ সালের ৪ এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রী আবারও সেই ঘোষণার পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী ঘোষণার কথা উল্লেখ করে ডেপুটি স্পিকার বলেন, প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হতে চললো এখনও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন হয়নি।

কেন প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন অধিদপ্তরে রূপান্তর হয়নি এমন প্রশ্ন রেখে ডেপুটি স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও কী কারণে এটি হচ্ছে না তা আমার বোধগম্য নয়। তাহলে কি আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে গেছে? আমরা কি তাহলে পাকিস্তানি আমলের আমলাতান্ত্রিক সেই ভূতের মধ্যে রয়েছি?

উন্নয়নের মূল ধারায় প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীরা ইতোমধ্যে তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, তাই প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের মূল ধারায় আনতে হবে। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারার বাইরে রেখে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের টেকসই উন্নয়নের গোল (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে অবশ্যই প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের মূল ধারায় আনতে হবে।

এজন্য প্রয়োজনের বিশেষ প্রকল্প বা বরাদ্দ রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

ডেপুটি স্পিকার আরও বলেন, অলিম্পিক খেলায় অংশগ্রহণের জন্য সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে। অথচ ফলাফল তেমন একটা ভালো নয়। কিন্তু আমাদের প্রতিবন্ধীরা বিশেষ অলিম্পিকে তাদের স্বকীয়তা ও মেধার নৈপুণ্যে স্বর্ণ, রোপ্য ও ব্রঞ্জ পদক জয়লাভ করে আমাদের গৌরাবান্বিত করেছে। তাই অলিম্পিকে যে টাকা খরচ হয় তার কিয়দংশ প্রতিবন্ধীদের জন্য খরচ করলে ওরা আমাদের গৌরব বয়ে আনবে।

সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডেপুটি স্পিকার বলেন, আমরা সমাজে অনেক সুবিধাভোগী লোক বিভিন্ন সুবিধা নেওয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত থাকি। কিন্তু অনগ্রসর এই গোষ্ঠীর কথা একবারও চিন্তা করি না। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে যেটুকু হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দরদের কারণেই হয়েছে। আজ প্রতিবন্ধীরা সমাজে নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। তাই সরকারের পাশাপাশি বিত্তবান লোকদের প্রতিবন্ধীদের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাবো।

প্রতিবন্ধীদের অবজ্ঞা করে ডাকার অভ্যাস পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে ফজলে রাব্বী বলেন, আমরা অনেকেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বিভিন্ন অপমানসূচক বিশেষ নাম ধরে ডাকি। যারা একাজ করেন তারা হয়তো জানেন না প্রতিবন্ধীদের অভিভাবকদের বুকে রক্তক্ষরণ হয় তার সন্তানকে অপমানসূচক ডাক দিলে।

ডেপুটি স্পিকার আরও বলেন, আজ থেকে ২০ বছর আগে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অভিভাবকরা নিজেদের সন্তানের পরিচয় দিতে চাইতেন না। সেই অবস্থার অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। প্রতিবন্ধীরা আজ সমাজের একটি অংশ। ওরা সুযোগ পেলে সমাজের কিছু দিতে পারবে। সেই যোগ্যতার তারা প্রমাণ দিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৬
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।