ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২৩ বছর পর নিজস্ব ভবনে যাচ্ছে পল্লবী থানা

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৬
২৩ বছর পর নিজস্ব ভবনে যাচ্ছে পল্লবী থানা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আকাশি রঙের ছয়তলা ভবন। সামনের সাদা সাইনবোর্ডে সবুজ কালিতে লেখা ‘পল্লবী থানা’। ভবনের নিচতলা, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় চলছে থানা পুলিশের সব কার্যক্রম।

ঢাকা: আকাশি রঙের ছয়তলা ভবন। সামনের সাদা সাইনবোর্ডে সবুজ কালিতে লেখা ‘পল্লবী থানা’।

ভবনের নিচতলা, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় চলছে থানা পুলিশের সব কার্যক্রম।

১৯৯৩ সালে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের ৯ নম্বর রোডের সি ব্লকে প্রতিষ্ঠিত হয় পল্লবী থানা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত এ ভবনেই চলছে থানার কার্যক্রম।

এটি থানার নিজস্ব ভবন নয়, ভাড়া নেওয়া ভবন।

তবে দীর্ঘ ২৩ বছর পর এবার স্থায়ী ঠিকানা পেতে চলেছে রাজধানীর মিরপুর বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ এই পল্লবী থানা। কালশী ইসিবি চত্বরের পাশের জায়গায় স্থাপিত নিজস্ব ভবনে থানা স্থানান্তরের কাজও চলছে।

থানা কর্তৃপক্ষ বলছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের শুরুর দিকে জানুয়ারি মাসেই পল্লবী থানাকে নিজস্ব জায়গায় স্থানান্তর করা হবে।

পল্লবী থানার গেটের সামনেই বালুর বস্তা দিয়ে বাংকার তৈরি করা হয়েছে। এটি থানার নিরাপত্তার জন্য। সেখানে অনগার্ডে রয়েছেন দু’জন নিরাপত্তাকর্মী- একজন করে পুলিশ ও আনসার সদস্য।

গেটের ভেতরে হাতের বামে ডিউটি অফিসারের কক্ষ। সেখানে কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিচিত্রা, দু’জন নারী পুলিশ সদস্য ও একজন ওয়্যারলেস অপারেটর।

একটু সামনে থানার হাজতখানা। এর পাশে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষ। অন্য পাশে থানার গেস্টরুম।

দোতলায় উপ-পরিদর্শকদের বসার কক্ষ। তৃতীয় তলায় রয়েছে পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনারের (এসি) কার্যালয়। থানার প্রতিটি কক্ষই প্রয়োজনের তুলনায় ছোট আকৃতির।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির বাংলানিউজকে জানান, থানা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২২ বছর কোনো হাজতখানা ছিলো না। আসামি রাখতে মিরপুর মডেল থানায় যেতে হতো। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর হাজতখানাটি স্থাপিত হয়েছে।

থানার সামনে ডান পাশে পুলিশের মোটরসাইকেল আর বাম পাশে রাখা জব্দ করা মোটরসাইকেল। রাস্তার অন্য পাশে জব্দ করা গাড়ি আর থানার টহল গাড়ি। সড়কের ওপরই রাখা জব্দকৃত লেগুনা, পিকাপ ও প্রাইভেটকারের চাকাগুলো ভেঙে মাটিতে মিশে যাচ্ছে আর ধুলার চাদরে ঢাকা। অন্য পাশেও রয়েছে অসংখ্য রিকশার স্তুপ।


পল্লবী থানার ১টি পুলিশ ফাঁড়ি ও ৭টি বিট রয়েছে। সব বিটের কার্যক্রম হয় কালশীর ইসিবি চত্বরে থাকা ফাঁড়িতে।  

প্রায় ৮ লাখ মানুষের বসবাস পল্লবী থানায়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে, যার বেশিরভাগই মাদক সংক্রান্ত।

সূত্র জানায়, পল্লবী থানায় মাসে ৮০ থেকে ১০০টি মামলা হচ্ছে। নভেম্বরে হওয়া মোট ৯৫টি মামলার ৬০ শতাংশই মাদক সংক্রান্ত। বাকিগুলো ধর্ষণ, হত্যা ও মরদেহ উদ্ধার সংক্রান্ত মামলা। আর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

পুরো পল্লবী থানা এলাকায় মোট ১৩টি মাদকস্পট রযেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- পল্লবীর বিহারি ক্যাম্পের রিলিজ ক্যাম্প, ফুটবল গ্রাউন্ড ক্যাম্প, মিল্লাদ ক্যাম্প ও কাল্লু স্পট। ভাসমান আরও কিছু মাদক ব্যবসায়ী রয়েছেন বলেও থানা সূত্রে জানা গেছে।    

ওসি দাদন ফকির বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হলেও কিছুদিন পর জামিনে বের হয়ে ফের একই কাজে লিপ্ত হন। অতীতে কাদের ম্যানেজ করে এই থানা এলাকায় তারা মাদক ব্যবসা করেছেন জানি না। তবে আমি আসার পর থেকে মাদকের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’, কোনো ছাড় নেই’।

‘মাদক পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়, এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর এ কাজটি পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে’।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৬
এসজেএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।