ঢাকা: বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের কারণে চারদিন এগিয়ে এনে ১০ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের (নাসিক) আইন-শৃঙ্খলার ওপর বৈঠক করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেখানে উপস্থিত থাকতে সশস্ত্র বাহিনীকেও নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।
ইসির উপ-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান (০৪ ডিসেম্বর) সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে নির্দেশনার চিঠি পাঠিয়েছেন।
এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ১৪ তারিখের পরিবর্তে ১০ ডিসেম্বর নাসিক নির্বাচনের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ মিলনায়তে।
এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সভাপতিত্ব করবেন। বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, আনসার, ভিডিপি, র্যাব, বর্ডাব গার্ড অব বাংলাদেশ, কোস্টগার্ড, ডিজিএফআই, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদেরও বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য চিঠিতে বলা হয়েছে।
তবে বৈঠকের কার্যপত্রে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য বা সেনা বাহিনীকে মোতায়েনের বিষয়ে কোনো পরিকল্পনার উল্লেখ নেই। কার্যপত্রে কেবল র্যাব, পুলিশ, আনসার, এপিবিএন, কোস্টগার্ড ও বিজিবি নিয়োজিত করার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ রয়েছে।
২২ ডিসেম্বর নাসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে ভোটের আগে-পরে মিলিয়ে ৪দিন ওই বাহিনীগুলোকে নিয়োজিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
নাসিকের মোট ২৭টি ওয়ার্ডে ১৭৪টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৩০৪টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হবে। এক্ষেত্রে সাধারণ কেন্দ্রে আনসার, পুলিশ ও অঙ্গীভূত আনসারের সমন্বয়ে ২২ এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জনের ফোর্স মোতায়েন করা হতে পারে।
এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় প্রতি ওয়ার্ডের একটি করে মোবাইল টিম, ৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, র্যাবের ২৭টি টিম, ২২ প্লাটুন বিজিবি ও ৩ প্লাটুন কোস্টগার্ড নিয়োজিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
এদিকে নির্বাচনী প্রচারণার শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সোমবার (৫ ডিসেম্বর) মাঠে নামছে ২৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণকে প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রকল্প অনুমোদন, অর্থ ছাড় বা কোনো ত্রাণ কার্যক্রম না চালানোর জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া বহিরাগতদের ১৯ ডিসেম্বর রাত ১২টার আগের এলাকা ছাড়তে বলা হয়েছে।
নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের মোটরযান বা নৌযান চলাচলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে ২১ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২২ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত ১ দিনের জন্য নির্বাচনী এলাকায় লঞ্চ, স্পিডবোট, ট্যাক্সি ক্যাব, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে। আর মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে ১৯ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২৩ ডিসেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার পূর্বানুমতি সাপেক্ষে সীমিত আকারে মোটরযান চলাচল করতে পারবে।
এ নির্বাচনে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন। এরা হলেন-আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, বিএনপির অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, এলডিপির কামাল প্রধান, কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাসুম বিল্লাহ, ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেজবাহ উদ্দিন ভুলু।
এবার মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮জন। নির্বাচনে মোট ১৬৩ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ১২১৭ সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ২৪৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৬
ইইউডি/এসএইচ