ঢাকা: ১৫ দিন আগে ছোট দুই ছেলে আর এক মেয়েকে ফেলে রেখে চলে গেছে স্বামী। থাকার মধ্যে ছিলো শেষসম্বল ঘরটুকু, সেটাও পুড়ে গেলো।
রোববার (০৪ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর মহাখালী এলাকায় কড়াইল বস্তির বউ বাজারে আগুনে পুড়ে ঘর হারানো মানুষের আর্তনাদ-আহাজারিতে চিত্র এখন এমনই।
নয় মাসের ব্যবধানে আবারও কড়াইল বস্তিতে আগুন লেগে পুড়েছে ৪শ থেকে ৫শ ঘরবাড়ি, আহত হয়েছেন ১৫ থেকে ২০ জন। সব হারিয়ে রাস্তায় বসার উপক্রম হয়েছে প্রায় তিন হাজার মানুষের।
অন্ধকারে ছাই হয়ে যাওয়া টিন ধরে চিৎকার করে কাঁদছেন হালিমা (৫৫), সারাজীবন মানুষের বাসায় কাজ করে একটা ঘর দিয়েছিলাম, স্বামী মারা গেছে ১৫ বছর। দুই ছেলের কেউই কোনো খোঁজ রাখে না, মানুষের বাসায় কাজ করে খাই। রাতে ঘরে ফিরে মনে হয়, আমার সব আছে, স্বামী আছে, ছেলে আছে। এই ঘরই আমার সব। আজ থেকে আমি সব হারালাম। সবার ক্ষতি মিটে গেলেও আমি যা হারালাম সেটা কোনোদিনও মিটবে না।
দুঃখ তুলনা করার মাপকাঠিতে মাপা যাচ্ছে না সব হারানো ভুক্তভোগীদের।
‘ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আমার দুঃখ নেই, আমার বাপধনরে আমাকে ফিরত দাও, আমি আর কিছুই চাই না। ’
দুর্ঘটনার সময় শত শত মানুষের, দিক-বেদিক ছোটাছুটির ভিড়ে পাঁচ বছর বয়সী রিপনকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাওয়া মা ফরিদা এই ভাবেই বিলাপ করছিলেন।
খাবারের জন্য চিৎকার করতে থাকা ছেলে রবিনের (৬) শরীরে হাত তুলে মা কাজল (৩০) ক্ষিপ্ত হয়ে বলছেন, ভাত নাই, হামাকি (আমাকে) খা। ছোট রবিন না বুঝলেও ছেলের মুখে খাবার তুলে দিতে না পারায় মা কাজল যে কতোটা কষ্টে রয়েছেন, পানিতে গড়াগড়ি খেয়ে কাঁদা দেখে তা বোঝা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৬
এসটি/এসএনএস