সিলেট: ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর, এই দিনে পাক হানাদারমুক্ত হয়েছিল সিলেটের বালাগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা। ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বালাগঞ্জ থানা সংলগ্ন এলাকায় সম্মিলিত অবস্থান নেন মুক্তিযোদ্ধারা।
সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ এ এলাকাকে মুক্ত করতে ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর সকালে ভারতের সীমান্তবর্তী রাতছড়া থেকে ৪০ জনের একটি চৌকস দল বালাগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। তবে পাকবাহিনী পালিয়ে গেলেও বালাগঞ্জ থানার ওসির নেতৃত্বে একদল বাঙালি পুলিশ বালাগঞ্জ থানা ভবনে অবস্থান করেন। রাতভর মুক্তিযোদ্ধারা থানা ভবন ঘেরাও করে রাখেন।
পরদিন ৭ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে লোকমারফত ওসির কাছে আত্মসমর্পণের নির্দেশ পাঠিয়ে জানানো হয়, মুক্তিবাহিনী চারদিকে ঘিরে ফেলেছে। আত্মসমর্পণ ছাড়া কোনো পথ নেই। পরে পুলিশ বাহিনী থানা ভবনের মালখানায় তাদের সব অস্ত্র জমা দেয়। সকাল ১০টায় বালাগঞ্জ থানার ওসি বালাগঞ্জ ডাক বাংলোয় মুক্তিবাহিনীর কাছে থানার চাবি হস্তান্তর করেন।
এদিন এলাকার মুক্তিকামী মানুষের হর্ষধ্বনীতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে বালাগঞ্জ। পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে পুড়িয়ে ফেলে থানায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। উপস্থিত শতশত জনতা মুক্তিবাহিনীকে বালাগঞ্জে স্বাগত জানায়।
অন্যদিকে, ৭ ডিসেম্বর বিয়ানীবাজার শত্রুমুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে কোম্পানি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ মুছব্বিরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে বিয়ানীবাজারে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। ২০১২ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ানীবাজার শত্রুমুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
এই দুই উপজেলা পাক হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন অনুষ্ঠান হাতে নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৬
এনইউ/জেডএস