ময়মনসিংহ: অপূর্ব দৃষ্টিনন্দন। ময়মনসিংহ বাইপাস মোড়ে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে রাতের বেলায় এক নান্দনিক আলোক ভাস্কর্য মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
ময়মনসিংহ-ঢাকা চার লেন মহাসড়কের মোড়ে গোল চত্বরে অস্থায়ী এ ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।
লাখো শহীদের রক্তস্নাত বিজয়ের দিন উদযাপনের জন্য স্মৃতিসৌধের আদলে এ আলোক ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে এলইডি বাতি দিয়ে। এ ভাস্কর্যের মূল আকর্ষণ রাতের বেলা।
লাল-নীলসহ হরেক রঙের বাতিতে অপূর্ব মনোহারিণী দেখায় এ বাইপাস মোড়কে।
আর এ প্রতীকি ভাস্কর্যের উদ্যোক্তা জেলা মোটর যান শ্রমিক ইউনিয়নের দিঘারকান্দা বাইপাস শাখা অফিস। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল।
লাখো শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার অনুপম নিদর্শন হয়ে ওঠেছে এ প্রতীকী আলোক ভাস্কর্য।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর দিকে ময়মনসিংহ নগরীর সূচনা পয়েন্টে গিয়ে সুদৃশ্য এ আলোক ভাস্কর্যের টিকড়ে পড়া সৌন্দর্য অবলোকন করা হয়।
রাত পোহালেই বিজয়ের মাহেন্দ্রক্ষণ মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুত মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি নগরী ময়মনসিংহ।
নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ চত্বরে ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু’র উদ্যোগে করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের দ্রুপদী ভাস্কর্য। ওই মোড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘বিজয় মোড়’।
তেমনি অস্থায়ী এক দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য গড়ে তোলা হয়েছে স্থানীয় দিঘারকান্দা বাইপাস মোড়ে। দূর থেকে দুরপাল্লার যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এ আলোক ভাস্কর্য। এ ভাস্কর্যটি যেন সবার সামনে নিয়ে এসেছে ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতি।
স্থানীয়রা জানান, এমনটা আগে ছিল না। গোল চত্বরের আগে জায়গাটি ছিল পোস্টার-ব্যানারে পরিপূর্ণ। জেলা প্রশাসনের পরিচ্ছন্নতা অভিযানের আওতায় এসব জঞ্জাল অনেকটাই অপসারণ করা হয়েছে।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই সেই জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী আলোক ভাস্কর্য।
একজন পথচারী বললেন, ‘এটি একটি চমৎকার থিম। এটিকে এখানে স্থায়ী করা গেলে ময়মনসিংহের প্রবেশ পথের সৌন্দর্য সবার সামনে এক্সপোজ হতো। একই সঙ্গে অনন্য উদাহরণও হতে পারতো এ বাইপাস মোড়।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাঙালি জাতি পায় লাল-সবুজের একটি জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত এবং মানচিত্র।
এসব বিষয় সামনে নিয়েই জেলা মোটর যান শ্রমিক ইউনিয়নের দিঘারকান্দা বাইপাস শাখা অফিস গত ১০ ডিসেম্বর থেকে স্মৃতিসৌধের আলোকে প্রতীকী আলোক ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
সেইদিন থেকেই স্থানীয় রামিম ডেকোরেটরকে এ ভাস্কর্য তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়।
প্রতিদিন ৬ জন শ্রমিক দিনে-রাতে এখানে কাজ করছেন বলে জানান ইলেকট্রিক মিস্ত্রী কাজল। তিনি জানান, ‘এলইডি বাতি দিয়ে সংগ্রাম ও বিজয়ের প্রতীক স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকা যাবার পথে একটি এবং কেওয়াটখালী যেতে আরো দু’টি তোরণও নির্মাণ করা হয়েছে এ বাতি দিয়েই। ’
স্থানীয় রামিম ডেকোরেটরের স্বত্ত্বাধিকারী মো. মজিবুল হক জানান, সব মিলিয়ে এটি তৈরিতে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া রাস্তার পূর্ব এবং পশ্চিম পাশেও এলইডি বাতিতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
এমএএএম/বিএস