ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বদলিতে আরও বেপরোয়া সিলেটের জেলার মাসুদ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১৭
বদলিতে আরও বেপরোয়া সিলেটের জেলার মাসুদ! জেলার মাসুদ - ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: অনিয়ম, দুর্নীতি, অপরাধ করা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল সিলেট কারাগারের জেলার মাসুদ পারভেজ মঈনের। তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলনের পর তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয় পার্বত্যজেলা রাঙামাটিতে। কিন্তু বদলির অর্ডার না মেনে আরও প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে ওঠেন তিনি। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে দিতে থাকেন মামলা। হয়রানি করতেও ছাড়েননি তিনি।

গত ৮ ডিসেম্বর জেলার মাসুদকে তার নিজ জেলা থেকে সরিয়ে রাঙামাটিতে বদলি করা হয়। গত ২২ ডিসেম্বর সেখানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার।

কিন্তু জানুয়ারির প্রথম দিন পর্যন্তও তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি। শোনা যাচ্ছে, সিলেট বিভাগের মধ্যেই থাকতে চান তিনি।

মাসুদের নিজ গ্রাম কানাইঘাটের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বদলির কারণেই প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে তার প্রতিপক্ষদের ফাঁসাতে নারী নির্যাতনের মামলা দিয়েছেন। কারণ তারা জেলারের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। প্রবাসী কল্যাণ সেলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।

নতুন কর্মস্থল রাঙামাটিতে যোগ না দিয়ে মাসুদ গ্রামে অবস্থান করে ভাতিজিকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনকারী ও একজন প্রবাসীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছেন- এমন অভিযোগ প্রবাসী খালেদুর রহমান ও গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলামের।

মামলায় প্রবাসী খালেদুর রহমানসহ আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রবাসী খালেদুর আগেই থানায় গিয়ে জিডি করেছিলেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তাকে হত্যাচেষ্টা ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন জেলার।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার মাসুদ পারভেজ মঈন তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও প্রবাসীর অভিযোগের কারণে পেশাগতভাবে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে বাংলানিউজকে জানান।

তবে মামলা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার ভাতিজি এ মামলা দায়ের করেছেন। ’

কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে জানান, মামলার কয়েক সপ্তাহ আগে প্রবাসী খালেদুর হত্যাচেষ্টার অভিযোগে জেলারের বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন। এছাড়া জেলারের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীরও অভিযোগ ছিল। তদন্ত অনুযায়ী পুলিশ সব ব্যবস্থা নেবে।

জেলার তার গ্রামে গিয়ে যে প্রতিপক্ষকে মামলা দিয়েছেন, বিষয়টি অবগত সিলেট জেলা পুলিশ সুপার।

বাংলানিউজকে পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান বলেন, কানাইঘাট থানা পুলিশকে তদন্তসাপেক্ষ নিরপেক্ষ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।   জেলারের পক্ষ পুলিশ কাজ করছে- এমন অভিযোগ কেউ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলারের মামলার আরেক আসামি নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, তার বাড়ি আর জেলারের বাড়ি একই গ্রামে। গ্রামের বাড়ির জমি দখল করে নিজের দালান তুলেছেন জেলার। এরপর থেকে জেলার মাসুদ গ্রামে এসে প্রায়ই তাদের ওপর আক্রমণের চেষ্টা চালান। থানায় তিনি এ বিষয়ে অভিযোগও দিয়েছেন।
 
জেলারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, জেলার মঈনের সঙ্গে কারাগারের একজন উপ মহা-পরিদর্শকের সুসম্পর্ক রয়েছে। ওই উপ মহা-পরিদর্শকের বাড়ি জেলারের জেলায় হওয়ায় এ সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে বারবার পার পেয়ে যান মঈন।
 
সূত্র আরও জানায়, জেলার মাসুদ পারভেজ রাঙামাটি যোগ না দিয়ে সিলেট বিভাগের ভেতরেই থাকতে চাচ্ছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
এসএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।