ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বড়পুকুরিয়া খনি শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে, শ্রমিক অসুস্থ

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৭
বড়পুকুরিয়া খনি শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে, শ্রমিক অসুস্থ

পার্বতীপুর (দিনাজপুর): স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সহস্রাধিক শ্রমিকের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবস্থান ধর্মঘট সোমবার (৯ জানুয়ারি) দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। 

খনি ভূ-গর্ভের প্রায় এক হাজার ৪০০ ফুট নিচে আন্দোলনরত ২৮৫ শ্রমিকের অনেকে এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে অবস্থায় গুরুতর হওয়ায় সৈয়দার রহমান (৩২) নামে এক শ্রমিককে রোববার দিনগত রাতে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে রোববার (৮ জানুয়ারি) দুপুর থেকে খনি ভূ-গর্ভে ও সারফেজে কর্মরত এক হাজার ৪১ শ্রমিক নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন।  

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম খনির আবাসিক গেটে থাকা সাংবাদিকদের বলেন, এক দফা দাবিতে খনি ভূ-গর্ভে ২৮৫ জন ও সারফেজে প্রায় সাড়ে চারশ’ শ্রমিক ধর্মঘট পালন করছেন। বাকিরা খনি গেটে অবস্থান করছেন। তাদের খনির ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, স্থায়ী নিয়োগ ছাড়া উপরে উঠবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন খনি ভূ-গর্ভে অবস্থানরত ২৮৫ শ্রমিক।

সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে স্থায়ী নিয়োগের দাবি না মানলে আমৃত্যু অনশন শুরু করা হবে বলেও হুমকি দেন তিনি।

খনি গেটে এসে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) ও উপমহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) খান মো. জাফর সাদিক কয়লা উৎপাদন বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা চলছে।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক হাজার ৪১ জন শ্রমিক কয়লা খনিতে কাজ করে আসছেন। তাদের দৈনিক মজুরি দেওয়া হয় সারফেজে ২৯৭ টাকা এবং ভূ-গর্ভে ৩৫০ টাকা। মাসে একজন শ্রমিক ১৮-২০ দিনের বেশি কাজ করতে পারেন না। ফলে মাস শেষে তাদের বেতন দেওয়া হয় ছয় হাজার থেকে সাত হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করতে হয় তাদের। খনির বর্তমান এমঅ্যান্ডপি চায়নিজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি’র সঙ্গে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে চুক্তি শেষ হবে। এরই মধ্যে খনি কর্তৃপক্ষ এমঅ্যান্ডপি ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

২০১১ সালে খনি কর্তৃপক্ষ বলেছিল খনির এমঅ্যান্ডপি ঠিকাদারের সঙ্গে পরবর্তী চুক্তির সময় শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী করা হবে। কিন্তু তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিগত তিন মাস ধরে কয়েক দফা চিঠি দিয়ে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানানো হলেও খনি কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেনি।  

খনি কর্তৃপক্ষের নানা তালবাহানার মুখে রোববার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে খনি ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক ভবনের পাশে কয়েকশ’ শ্রমিক সমাবেশ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৭
এসআই 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।