ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৭
স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (ফাইল ফটো)

ঢাকা: স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি)। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিব।

দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। পাকিস্তানের শাসন-শোষণ ও অত্যাচার-নির্যাতনের হাত থেকে বাঙালিকে মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।

এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে জীবনের একটা বড় সময় শেখ মুজিবকে জেল, জুলুম ও নির্যাতন ভোগ করতে হয়।

পাকিস্তান ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির সফল আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্যদিয়েই বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হন।

আন্দোলন-সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা চালাতে শুরু করে। এই ঘটনার সঙ্গে-সঙ্গে বঙ্গবন্ধু তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এর পরপরই বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। শুরু হয় বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলতে থাকে। এই সময় বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি রেখে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার নানা পরিকল্পনা করে পাকিস্তানিরা।

জেলের মধ্যে অত্যাচার নির্যাতনই শুধু নয়, তাকে ফাঁসির মঞ্চেও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দেশে-বিদেশে বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা ও তার অদম্য সাহসের কাছে হারমানে পাকিস্তান।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে ৩০ লাখ শহীদ এবং ৩ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের মধ্যদিয়ে বাঙালি বিজয় অর্জন করে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকায় বাঙালির অর্জিত বিজয় পূর্ণতা পায়নি। বিজয়ী বাঙালি জাতি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যদিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে তাদের নেতা ফিরে আসার।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধু জনপ্রিয়তা আরো বাড়তে থাকে। বাঙালির পাশাপাশি বিশ্বের স্বাধীনতা ও শান্তিকামী মানুষও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবি তোলে। আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করে অবশেষে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু সোজা লন্ডন চলে যান। সেখান থেকে ১০ জানুয়ারি স্বদেশে ফেরেন।

সেদিন সারাদেশ থেকে মানুষ ছুটে আসেন তাদের নেতাকে একবার দেখতে। সারাদেশ থেকে আসা লাখ জনতা তাদের প্রাণের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাগত জানান এবং বাঙালির ভালবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধু।

বিমানবন্দর থেকে লাখ জনতার সমুদ্র পাড়িয়ে দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স) দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু জনতার উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, ‘বাঙালি আমাকে সে ভালবাসা দিয়েছে সেই বাঙালির জন্য আমি রক্ত দিতেও প্রস্তুত। ’
 
এদিকে, বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) জনসভার আয়োজন করেছে তার হাতে গড়া দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এদিন বিকেলে ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত এই জনসভায় বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভাকে জনসমুদ্রে রূপান্তরিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। জনসভার মধ্যদিয়ে বড় ধরনের রাজনৈতিক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি।

**পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন

বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
এসকে/টিআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।