এ ধরনের রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগও বাংলাদেশে প্রথম।
সোমবার (০৯ জানুয়ারি) রাজধানীর রেল ভবনে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তিনি।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম হয়ে লাকসাম পর্যন্ত বুলেট ট্রেন চালু করবো। তবে তার আগে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী পেতে হবে। অর্থের নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই আমরা বুলেট ট্রেনের রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু করবো’।
‘রেলপথ হচ্ছে একটি নিরাপদ ও আরামদায়ক সাশ্রয়ী মাধ্যম। রেলের মাধ্যমে আমরা জাতিকে আরও সেবা দিতে চাই’।
মুজিবুল হক বলেন, ‘বিএনপির আমলে রেল একটি অবহেলিত যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রেলপথকে গুরুত্ব দিয়ে আলাদা মন্ত্রণালয় করে দিয়েছেন। আরও অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় চালু করবো বুলেট ট্রেন’।
‘মানুষ দিন দিন ট্রেন ভ্রমণ বাড়িয়ে দিচ্ছেন। প্রতিদিনই রেলপথের যাত্রী বাড়ছে। আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন রেলপথে প্রতিদিন এক লাখ ৬০ হাজার থেকে এক লাখ ৭০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হতো। এখন আড়াই লাখ যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। রেলপথের অনেক সমস্যা কমে এসেছে। বাকি যেসব সমস্যা আছে, সেগুলোরও সমাধান করবো’।
ঢাকা-চট্টগ্রাম বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুটের একটি। এ রুটের দৈর্ঘ্য ৩২০ দশমিক ৭৯ কিলোমিটার। বর্তমানে ঢাকা থেকে টঙ্গী –ভৈরব বাজার-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা হয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছে। ফলে ভ্রমণে অনেক বেশি সময় লাগছে।
ঢাকা থেকে কুমিল্লার লাকসাম হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত হাইস্পিড ট্রেন লাইন নির্মিত হলে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরত্ব ও প্রায় দুই ঘণ্টা সময় কমবে। তখন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব দাঁড়াবে ২৩০ কিলোমিটার। এ পথে ট্রেন চলবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে। ফলে ঢাকা থেকে দুই ঘণ্টায় পৌঁছানো যাবে চট্টগ্রামে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণের নির্দেশ দেন। তখন থেকেই প্রকল্পের ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোপোজাল) তৈরির কাজ শুরু করে মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে কয়েক দফা পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুলেট রেলপথ নির্মাণে সমীক্ষা প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য সমীক্ষা প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণেরও একটি সম্ভাব্য সমীক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। বুলেট রেলপথটি এ এক্সপ্রেসওয়ের পাশ দিয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনটি সম্ভাব্য রুট নির্ধারণ করা হয়েছে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য। এর মধ্যে মদনপুর (ঢাকা) –দাউদকান্দি-কুমিল্লা-ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম রুটের দৈর্ঘ্য ২১৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার, মদনপুর (ঢাকা)–দাউদকান্দি-বরুড়া-ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম রুটের দৈর্ঘ্য ২০৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার এবং মদনপুর (ঢাকা) –দাউদকান্দি-চাঁদপুর-ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম, এই রুটের দৈর্ঘ্য ২৮০ কিলোমিটার। এ তিনটি রুটের মধ্যে দূরত্ব কম হওয়ায় মদনপুর (ঢাকা)– দাউদকান্দি- বরুড়া-ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান রেলমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
**চিত্রায় প্লেনের ছোঁয়া
**‘সোনার বাংলা’ চলেছে চট্টগ্রাম
**সময় মেনেই চট্টগ্রাম পৌঁছালো ‘সোনার বাংলা’
**‘সোনার বাংলা’ ঘিরে সাজ সাজ রব
**১৬ কোচে ৭১৯ আসন নিয়ে নতুন ‘পারাবত’
**নতুন কোচ পাচ্ছে একতা-দ্রুতযান
**রেলের টিকিটে যুক্ত হচ্ছে যাত্রীর নাম
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর