তিনি মনে করেন, ট্রেন নিরাপদ আরামদায়ক এবং সাশ্রয়ী বাহন। বিএনপির আমলে রেলপথ ছিলো সবচেয়ে অবেহেলিত।
‘জনগণকে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ করছি’- বলেন মুজিবুল হক।
সোমবার (০৯ জানুয়ারি) দুপুরে রেলভবনে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তিনি।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘সেবার মনোবল নিয়ে কাজ করছে রেল। এখন রেলে প্রতি অর্থবছরে বাজেট বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক সময় যেখানে বাজেট ছিলো ৫০০ কোটি টাকা, সেখান থেকে এখন রেলের সর্বশেষ বাজেট হয়েছে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা।
তিনি বলেন, ‘আমরা রেলপথ সংস্কার করেছি। কিছু রেললাইন নির্মাণ করেছি। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ৩২০ কিলোমিটার রেলপথের লাকসাম থেকে আখাউড়া অংশ ডাবল লাইন হয়ে গেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে আরও বেশি ট্রেন চলবে। পণ্য পরিবহন করে রেলের আয় বাড়বে। এখন যে সময় লাগছে তার চেয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় কম লাগবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘সিগন্যালিং ব্যবস্থারও আধুনিকায়ন করা হবে। গত পাঁচ বছরে রেলে যাত্রী আনা-নেওয়া প্রায় এক লাখ বেড়েছে। ২০২১ সালে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। কারণ, সামনে আরও ইঞ্জিন-বগি আসছে’।
‘ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে ডিপি রেলের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে’।
মন্ত্রী বলেন, ‘দোহাজারি থেকে গুণধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হবে। দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার প্রথমে নির্মাণ করবো। অর্থায়ন করবে এডিপি’।
‘২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে পদ্মাসেতুতে ট্রেন চালাতে পারবো’।
মন্ত্রী বলেন, ‘রেলে বর্তমানে চলমান প্রকল্প ৪৪ টি। রেলের উন্নয়নে আরও নতুন নতুন প্রকল্প নেওয়া হবে’।
‘যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু প্যারালাল রেলসেতু নির্মাণেও কনসালট্যান্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীতে কোরিয়ার অর্থায়নে রোড কাম রেলসেতু হবে’।
‘আগামী ছয়মাসের মধ্যে আরও কোচ এসে যুক্ত হবে বাংলাদেশ রেলওয়েতে। ৭০টি লোকেমোটিভ ইঞ্জিনও যুক্ত হচ্ছে এ ছয়মাসের মধ্যে’- বলেন মুজিবুল হক।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এতো আধুনিকায়ন করেছি যে, এখন রেলকোচে উঠলে মনে হবে বাংলাদেশ বিমানে উঠেছেন’।
রেলে কালোবাজারি বন্ধে যাত্রীর নাম সম্বলিত টিকিট চালু করার কথাও জানান রেলমন্ত্রী। আগামী এক বছরের মধ্যে এটি করা যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
‘গেটকিপার নিয়োগেও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ১ হাজার ৮শ’র মতো গেটকিপার নিয়োগ আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ হবে’- জানান মন্ত্রী।
রেলপথমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, তার মন্ত্রণালয়ে কোনো ঘুষ চলে না। কেউ গরিবের টাকায় সামান্য চা পান করলেও তিনি কঠোর হবেন।
রেলের কারখানাগুলোর উন্নয়ন করে আগামীতে পাহাড়তলী ও সৈয়দপুর কারখানা থেকে রেলের আধুনিক কোচ নির্মানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, রেলে ৮ হাজারের ওপর বিভিন্ন পদে চাকরি হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে বাকি শূন্য পদগুলোতেও নিয়োগ চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
‘রেলস্টেশনে ধীরে ধীরে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হচ্ছে। দীর্ঘদিনের বদনাম ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ও এখন নেই। তবে বয়স্ক লোকদের না নিয়ে যেন ট্রেন না ছাড়ে, সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে’- বলেন মুজিবুল হক।
আরও পড়ুন:
**চিত্রায় প্লেনের ছোঁয়া
**‘সোনার বাংলা’ চলেছে চট্টগ্রাম
**সময় মেনেই চট্টগ্রাম পৌঁছালো ‘সোনার বাংলা’
**‘সোনার বাংলা’ ঘিরে সাজ সাজ রব
**১৬ কোচে ৭১৯ আসন নিয়ে নতুন ‘পারাবত’
**নতুন কোচ পাচ্ছে একতা-দ্রুতযান
বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
এসএ/এএসআর