ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নগরপিতা পেয়ে পরিচ্ছন্ন ঢাকা উত্তর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
নগরপিতা পেয়ে পরিচ্ছন্ন ঢাকা উত্তর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: ঢাকায় বসে ইউরোপ-আমেরিকার শহরের মতো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন শহরের স্বপ্ন দেখা ক’দিন আগ পযর্ন্ত ছিলো ‘বাতুলতা’। কিন্তু ঢাকা উত্তর-দক্ষিণের দুই মেয়রের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সরকারের সদিচ্ছার ফলে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন শহরের স্বপ্ন এখন আর ‘বাতুলতা’ নয়, বরং তা বাস্তব।

বিশেষ করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হকের জাদুর ছোঁয়ায় তার সিটি করপোরেশন এলাকা এখন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার রোল মডেল হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। চলমান উন্নয়নমূলক কাজগুলো শেষ হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ইউরোপ-আমেরিকার শহরগুলোকে টেক্কা দিতে পারবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


 
আনিসুল হকের এই পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা মিশন শুরু হয়েছিল ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বানের পরই। নির্বাচনের আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ভোট গ্রহণ শেষ হলেই সব পোস্টার লিফলেট অপসারণ করা হবে। নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই পোস্টার-লিফলেট অপসারণের কাজ সম্পন্ন করেন তিনি।
 
এরপর দু’টি ঈদুল আজহা মেয়র আনিসুল হকের জন্য চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। সে চ্যালেঞ্জ কৃতিত্বের সঙ্গে মোকাবেলা করেন তিনি। বিশেষ করে ২০১৬ সালের ঈদুল আজহা ছিলো মেয়র আনিসুল হকের জন্য সুখকর অভিজ্ঞতার।
পরিচ্ছন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন রোড/ ছবি: সুমন শেখ
 
মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এটি ছিল তার দ্বিতীয় ঈদুল আজহা। এই ঈদে বেধে দেওয়া সময়ের আগেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সব ময়লা অপসারণ করেন তিনি। কাজগুলো সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে ডিএনসিসির পদস্থ কর্মকর্তাদেরও মাঠে নামিয়ে দেন মেয়র।
 
শুধু বিশেষ দিন বা উৎসব উপলক্ষ্যে নয়, নগরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে সারা বছরই অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মেয়র। যার ফলে ডিএনসিসির বেশিরভাগ এলাকার সড়ক, সড়ক দ্বীপ, স্থাপনা, ডোবা-নালা, লেক, ঝিল, বাজার, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ ঝক-ঝকে তকতকে হয়ে উঠেছে।
 
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পযর্ন্ত ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন নগরীরর বাস্তব চিত্র চোখে পড়ে।
 
সকাল ১০টায় গুলশান-২ ও বারিধারা প্রগতি সরণিকে সংযোগ করা আনোয়ার হোসেন বীর প্রতীক সড়কে গিয়ে দেখা যায় ক’মাস আগের চিত্র সেখানে আর নেই।
 
খানা-খন্দে ভরা রাস্তা এখন সাপের পেটের মত মসৃণ। রাস্তায় দুই পাশে নেই কোনো ময়লার স্তুপ। ঝুপরি ঘরে নেই ছোট ছোট দোকান। রাস্তায় কেউ ভ্যানের উপর সবজি-ফল বিক্রি করছে না।
 
আনোয়ার হোসেন বীর প্রতীক সড়কে নিজ অফিসে কথা হয় ডিএনসিসি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাকির হোসেন বাবুলের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য নগর গড়ে তোলার। নগর পিতা আনিসুল হকের নেতৃত্বে আমরা সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
পরিচ্ছন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন রোড/ ছবি: সুমন শেখ
 গুলশান-বনানী লেকের উপর নির্মিত বেইলি ব্রিজ পার হয়ে বনানী ১১ নম্বর সড়ক ধরে নিউ এয়ারপোর্ট রোড পযর্ন্ত দুপুর ১টা থেকে দেড়টা টানা আধা ঘণ্টা ঘোরা-ঘুরি।
 
প‍ূর্ব দিক থেকে এ সড়কটা যেমন শুরু হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বেইলি ব্রিজ থেকে। পশ্চিমে তেমনি শেষ হয়েছে বনানী নিউ এয়ারপোর্ট রোডে নির্মিত চলন্ত সিঁড়িওয়ালা ফুটওয়াভার ব্রিজে।
 
সঙ্গত কারণেই, অভিজাত এলাকার এ সড়কটিকে একটু বেশিই পরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়োজন মনে করেছেন নগরপিতা। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন-পরিপাটি এই সড়কটিকে দেখে যে কেউ ভুল করতে পারেন। মনে হতে পারে ইউরোপ-আমেরিকার কোনো সড়ক অতিক্রম করছেন।
পরিচ্ছন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন/ ছবি: সুমন শেখ
 
গুলশান-বনানী-মহাখালী এলাকার শুধু সড়ক-ই নয়, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে করাইল বস্তিসংলগ্ন ঝিল-জলাশয়ে চলছে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। গুলশান-বনানী বেইলি ব্রিজের ওপর দাঁড়ালে চোখে পড়বে এ কর্মযজ্ঞ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নগরবাসী পাবে আরেকটি হাতির ঝিল।
 
নোংরা পানিতে তখন মশার প্রজনন দেখতে হবে না নগরবাসীকে। দুই পাড় সংস্কার করে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার আরেক মেগা-প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে ডিএনসিসিতে।
 
এ ছাড়া বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে ঢাকা হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পযর্ন্ত সড়ক ডিজিটালাইস্ট হচ্ছে অচিরেই। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন নগরীর এটিও হবে অন্যত অনুষঙ্গ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
এজেড/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।