ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গুলশান না গুলিস্তান!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
গুলশান না গুলিস্তান! গুলশান না গুলিস্তান!

ঢাকা: ‘ফেসবুকে দেখে মার্কেট করতে এখ‍ানে এসেছি। কিন্তু এ তো দেখছি হরিলুট। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এটি গুলশান মার্কেট, না গুলিস্তান মার্কেট’।

বলছিলেন বাড্ডা থেকে গুলশান ডিএনসিসি মার্কেট আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সিহাব হোসেন। কম দামে পণ্য কিনতে এসেছেন এই ক্রেতা।

গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেট পুড়ে যাওয়ার পর বাছাই করে অক্ষত বিভিন্ন পণ্য তুলনামূলক কম দামে বিক্রি করছেন সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। একটু কম দামে পণ্য কেনার আশায় মার্কেটের ভেতরে  দেখ‍া গেছে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। মার্কেটের পশ্চিম পাশের গেট দিয়ে নিকেতনে যাওয়ার সড়কটিও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে ক্রেতাদের সমাগমে।

ক্রেতাদের মতে, এ ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এটি গুলশান মার্কেট, নাকি গুলিস্তান মার্কেট!
 
তবে গুলশানের মতো স্থানে এভাবে দামা-দামি করে অথবা সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে পেরে খুশি অনেক ক্রেতা।

সন্তানের জন্য ৭০০ টাকায় খেলনা হারমোনিয়াম কিনেছেন মোস্তফা আকবর। ‘আগুনের ঘটনার আগে এসে এটির দ‍াম করেছিলাম ১ হাজার টাকা। দোকানিরা দেননি। আজ অবশ্য ৭০০ টাকায় কিনেছি’- বলেন মোস্তফা।
 গুলশান না গুলিস্তান!
মহাখালীর ওয়ারলেস থেকে এসেছেন চম্পা।   তিনি বলেন, ‘আগের তুলনায় স্যান্ডেলের দাম কম পড়েছে। ৩০০ টাকা করে ২ জোড়া স্যান্ডেল কিনেছি। আমাদের জন্য  ভালোই হয়েছে। সারা বছর কম মূল্যে পণ্য কিনতে পারলে আমাদের আর গলাকাটা দাম দিয়ে মার্কেট করতে হতো না’।
 
সেখানে বাহারি ডিজাইনের ছেলেদের পোশাক উঁচিয়ে ‘ফুরিয়ে গেলো ২০০, আর পাবেন না ২০০- এমন করে মার্কেটের জারা ফ্যাশনের কর্মচারীরা ডাকছেন ক্রেতাদের। তারা বলেন, ‘এমনেই এইগুলান বেচি ৭০০- ৮০০ টাকায়। পুড়ে যাওয়ার পর এগুলা হরিলুটের মাল হিসেবে বেচতাছি’।
 
আরেক দোকানি জুয়েলারি আইটেম নিয়ে মার্কেট সংলগ্ন নিকেতনের সড়কে বসেছেন। তিনি বলেন, ‘অ্যান্টিকের সেটগুলো আমরা বিক্রি করেছি ২ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা। এখন ১ হাজার টাকায়ই ছেড়ে দিচ্ছি। লাভ তো হবেই না। পণ্য শেষ করা দরকার’।  
 
তবে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা না থাকায় বাইরের ব্যবসায়ীরাও এখানে পণ্য বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেন কিছু দোকানি। ঘর সাজানোর পণ্য নিয়ে বসেছেন করিম। তিনি বলেন, আগুনের ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ছাড়াও বাইরে থেকে আসা হকাররাও সেখানে দোকান নিয়ে বসেছেন।
 
এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকে ডিএনসিসি মার্কেটের ভেতরে চলছে সংস্কার ও মেরামতের কাজ। কাঁচা পণ্যের মার্কেটের সম্পূর্ণ অংশ পুড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী বাজার। তবে গড়িমসি না করে যতো দ্রুত সম্ভব এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবিও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গত ০২ জানুয়ারি দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ডিএনসিসি মার্কেটে আগুন ল‍াগে। এতে মার্কেটের একাংশ ধ্বসে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হন শত শত ব্যবসায়ী।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
জেডএফ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।