ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টি এক্সপোয় ‘মোজো মামার স্পেশাল চা’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৭
টি এক্সপোয় ‘মোজো মামার স্পেশাল চা’ টি এক্সপোতে ‘মোজো মামার স্পেশাল চা’ নামে স্টল

ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা থেকে: ‘আপনার হাতের চা খাবো’-এমন আবদারে তার কাছ থেকে দিনে কয়েক’শ মানুষ চা পান করেন। মোজো মামাও মনে করেন, ‘যার যার হাতের একটা রস আছে।’ মোজো মামা তার আসল নাম নয়।আসল নাম মোজাম্মেল। চা পান করতে এসে মানুষ তার নাম মেজো মামা উপাধি দিয়েছেন। 

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দুই নম্বর হলে টি এক্সপোতে ‘মোজো মামার স্পেশাল চা’ নামে একটি স্টলে তার গল্প শোনা গেলো।  

প্রায় ৩০ বছর আগের কথা।

বনানী কামাল আতাতুক এভিনিউ’র ১৭ নম্বর সড়কে একটি টং দোকান খুলেছিলেন। তখন পুঁজি ছিলো মাত্র ৯০০ টাকা। এরপর সেই রোডে ১৯৯২ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা তার চায়ের স্বাদ পেয়ে যান।  

শিক্ষার্থীদের চা পান করিয়ে নিজে নিজে একটা তৃপ্তি পেতে থাকেন। তখন চায়ের দাম ছিলো প্রতি কাপ মাত্র ২ টাকা। নিজের পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলেকে ওদের মতো একদিন বিশ্ববিদ্যলয়ে পড়াবেন। আয়ের টাকা সঞ্চয় করে এমন স্বপ্ন বুনতে থাকেন মেজো মামা।  

৩০ বছর পর সেই স্বপ্নই তার সত্য হলো। টং দোকানের চা বিক্রি করে গাজীপুরের মাওনায় নিজের এলাকায় ৩ কাঠা জমির ওপর ঘর তুলেছেন। ছেলে এখন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ৬ষ্ঠ সেমিস্টারে পড়ছে।  

এই স্বপ্ন পূরণের গল্প তার টি স্টল থেকে। সেই টি স্টল এখনও আছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ীভাবে যখন বসুন্ধরায় আবাসিক এলাকায় আসে। তিনিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে একটি স্টল দেওয়ার সুযোগ পান।  
 
টি এক্সপোতে ‘মেজো মামার স্পেশাল চা’ নামে স্টল মোজাম্মেল বলছিলেন, ‘১৮ বছর বনানী ক্যাম্পাসের সামনে চা বিক্রি করলাম। তারপর বসুন্ধরায় নর্থ সাউথ নিজস্ব ক্যাম্পাস এলে সেখানে ক্যান্টিনে স্থান পেয়ে যাই। এখানে ৮ বছর ধরে চা বিক্রি করছি। ’

মোট ৯ স্বাদের চা তৈরি করে দেন মোজাম্মেল। তার একটি চা আছে ‘মাসালা চা’। এটি ৭ পদের মাসালা দিয়ে তৈরি । এছাড়াও পুদিনা চা, মালাই চা, ওভালটিন চা, ব্লাক কফি, কোল্ড কফি, নরমাল মিল্ক টি বানান তিনি।

সর্বোচ্চ ২০ টাকা দাম নেন চা’য়ে। আর সাধারণ চা মাত্র ১০ টাকা। এছাড়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফ ও গরিবদের জন্য গেল ৭ বছর থেকে সব ধরনের চা মাত্র ৫ টাকায় বিক্রি করেন মোজাম্মেল।  

তিনি ছাড়াও তার টি স্টলে আরও দু’জন কাজ করেন। স্বাদ অটুট রাখতে নিজেই বেশিরভাগ সময় দেন –জানালেন মোজ্জাম্মেল।  

টি এক্সপোতে দেশীয় বাহারি চা পণ্য চা মেলার মাঝে তার স্টল নিয়ে অংশ নিতে পেরে তিনি খুশি। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তার স্টল পরিদর্শন করেছেন। অনেকেই এখন মোজো মামার এক কাপ চা’য়ে চুমুক দিয়ে যাচ্ছেন। তিনিও অনবরত চা তৈরি করে দিচ্ছেন।  

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) এক্সপোর শেষ দিন পর্যন্ত মেজো মামা চা পরিবেশন করবেন বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৭
এসএ/পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।