শীতকাল শুষ্ক মৌসুম। চারদিকে একটা রুক্ষতার ভাব।
মিরপুর ১২ নম্বর থেকে আগারগাঁও তালতলা পর্যন্ত যেতেই ধুলো দূষণের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ওই এলাকাবাসীরা। ধুলো থেকে রক্ষা করতে সিটি করপোরেশনের কোনো ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করে এলাকাবাসী। ফলে, সকাল থেকে এ সড়কে যাতায়াতকারী কর্মব্যস্ত মানুষ নাকে রুমাল, কাপড় চেপে বা মাস্ক মুখে দিয়ে বের হচ্ছেন। আর যারা ধুলোর মধ্যে কোনো ধরনের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা না নিয়ে বের হচ্ছেন, তারা নিজের অজান্তে শরীরে নিচ্ছেন নানা ধরনের রোগব্যাধির জীবাণু।
মিরপুর পল্লবী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শীতকাল হওয়ায় এমনিতে বাতাসে ধুলো উড়তে দেখা যায়। তার ওপর এই রুটে মেট্রো রেলের কাজের কারণে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি হচ্ছে। তবে, কোনো কোনো স্থানে খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ হলেও ইট-বালু-খোয়া দিয়ে ঢেকে দেওয়া রাস্তা ধুলো দূষণের পরিমাণ বাড়িয়েছে বহুগুণে।
এতে মানুষ চরম অস্বস্তি নিয়ে চলাচল করছে। আর পরিবহনগুলোকেও ধুলো ভয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে যাতায়াত করতে দেখা যায়। আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে প্রতিদিন রাস্তা পরিষ্কার করলেও পানি ছিটিয়ে দিতে দেখা যায়নি। দেখা যায়, ধুলোর দাপট বেড়ে যাওয়ায় রাস্তা ধারে ও ফুটওভার ব্রিজে সৌন্দর্যবর্ধণের জন্য লাগানো গাছগুলো ধুলোয় মলিন হয়ে গেছে। মিরপুর ১০ নম্বর ফুটওভার ব্রিজের গাছগুলোতে ধুলোর আস্তরণ পড়ে তামাটে রঙ ধারণ করছে।
ধুলোর আক্রমণে শিকার আশিক বাংলানিউজকে বলেন, আমি মিরপুরের কাজীপাড়ায় থাকি। প্রতিদিন এই রুট দিয়ে চলাচল করতে হয়। একদিন একটা শার্ট পড়ে বেরুলে ওই শার্ট আর পরের দিন গায়ে জড়ানো যাচ্ছে না। তার উপর আমার এলার্জি সমস্যা ফলে ধুলোর কারণে ঠাণ্ডা সর্দি লেগেই রয়েছে।
শেওড়াপাড়া নান্না বিরিয়ানি হাউজের বিক্রেতা আজিম বলেন, আর বইলেন না, ধুলোর কারণে বেকায় আছি। দোকানপাট পরিষ্কার করতে করতে যান শ্যাষ! ঢাকা শহরের রাস্তা-ঘাটের বাপ-মা নাকি সিটি করপোরেশন-কই তাদের তো এক দিনেও পানি ছিটাতে দেখলাম না। আমার তো মনে হয় ধুলোর থেকে রাস্তায় ময়লা জমানোও ভালো।
এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে বলেন, ধুলো পরিবেশের উপাদান। তবে, এই ধুলো মানুষের জন্য ক্ষতিকরও। যেমন শ্বাসনালী, ফুসফুস ও লিভারের ক্ষতি করে। রাজধানীর ধুলো নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। কিন্তু করপোরেশনের পাশাপাশি রাজধানীর ধুলো তৈরি করছে ঢাকা ওয়াসা, বিটিআরসি, রাজউকসহ অন্যান্য সেবা সংস্থা। এসব সংস্থাকেও সিটি করপোরেশনকে রাজধানীর ধুলো নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে এগিয়ে আসতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলামের সঙ্গে ফোন ও এসএমএস দিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি প্রতিউত্তর করেন নি।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
এএটি/পিসি