শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকেই সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে, তবে আকাশ ফুটে বের হওয়া মায়াবী সূর্যের সেই কিরণ উত্তরের শীতার্ত মানুষগুলোর শরীরের উষ্ণতা ছড়াতে পারছে না।
কারণ রাজশাহীতে শনিবার মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কৃষিতেও দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। বিশেষ করে কৃষকের মাঠে থাকা আলুর ফসলে ‘লেট ব্লাইট’ (পচন রোগ) ছড়িয়ে পড়েছে। আর বোরো খেতের বীজতলায় দেখা দিয়েছে ‘কোল্ড ইনজুরি’।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি বাংলানিউজকে বলেন, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলেই আলুখেতে ‘লেট ব্লাইট’ দেখা দেয়। এজন্য এ সময় কৃষকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
থানা বা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আলু খেতে ছত্রাক নাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেন তিনি।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক দিন থেকেই তাপমাত্র কমছে। বর্তমানে রাজশাহীর ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্য প্রবাহ বইছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই অবস্থার উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই। রাতে কুয়াশা বাড়তে শুরু করলে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
তবে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচেই অবস্থান করবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে এই সপ্তাহ জুড়ে শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাবে রাজশাহী ও আশপাশের জেলার উপর দিয়ে। এ সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে বলেও জানান ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ১৩ জানুয়ারি (শুক্রবার) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত ৪ জানুয়ারি রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শনিবার চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৬২ শতাংশ।
ফলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে রাজশাহীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। হিমালয় ছুঁয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। বেশি দুর্ভোগের শিকার ছিন্নমূল মানুষ।
রাজশাহীর চর ও গ্রামাঞ্চলেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এসব এলাকার মানুষগুলোকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে কয়েক দিন থেকেই। এরই মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও বেসকারি সংস্থা শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় কম। সরকারিভাবে এখনও জোরেসোরে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি।
তবে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আতাউল গনি বাংলানিউজকে বলেন, যা বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল এরই মধ্যে তা রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও জেলার ৯ উপজেলার ইউএনওদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে।
আরো কম্বলের চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন এগুলো হাতে পাওয়া গেলেই তা আবার বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
এসএস/জিপি/বিএস