এছাড়া, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার হামলায় জড়িত শফিউল ইসলাম ওরফে ডনকেও হামলার জন্য প্রস্তুত করে রাজীব নব্য জেএমবির সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করেন।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে টাঙ্গাইলের এলেংগা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী ওরফে সুভাস ওরফে শান্ত ওরফে টাইগার ওরফে আদিল ওরফে জাহিদকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড টান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা।
গুলশান হামলায় জীবিত গ্রেফতারদের মধ্যে রাজীব গান্ধীই অন্যতম মূল হোতাদের একজন। তাই এখনো যারা ধরা পড়েনি তাদের সম্পর্কে তথ্য পেতে ও মামলার তদন্তকাজে অগ্রগতিতে রাজীব গ্রেফতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
রাজীব গান্ধীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশান হামলার আগে রাজীব গান্ধী নব্য জেএমবির ভাটারা থানার একটি অপারেশনাল হাউজে পরিবারসহ অবস্থান করেন। হামলার পরে সে পরিবারসহ শেওড়াপাড়ার আস্তানায় চলে যায়।
তিনি বলেন, রাজীব গান্ধী ২০০৪-০৫ থেকে জঙ্গিবাদে জড়ান এবং তিনি জেএমবি নেতা আব্দুল আওয়ালের ঘনিস্ট সহচর ছিলেন। পরে নব্য জেএমবিতে যোগদান করে তামিম চৌধুরীর ঘনিষ্ট সহযোগী ও উত্তরবঙ্গের সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তিনি বলেন, গুলশান হামলার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বাশারুজ্জামান চকলেটসহ আরো ২জন রয়েছে বলে এ পর্যন্ত তদন্তে জানা গেছে, যাদেরকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। রাজীব গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো কোনো ক্যারেক্টার জড়িত আছে কিনা জানা যাবে।
গুলশান হামলার চার্জশিট দাখিল করতে কতোদিন সময় লাগবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি একটি বড় ঘটনা, এখানে এতো বেশি আলামত-স্বাক্ষী ও ভিকটিম জড়িত যেজন্য আরো কিছুটা সময় লাগবে। তবে রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তদন্তের কাজে অনেকটাই গুছিয়ে আনা যাবে।
গুলশান হামলার মামলায় রাজীব গান্ধীর ১০দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, তামিম চৌধুরীর ঘনিষ্ট সহযোগী ছিলেন রাজীব গান্ধী। তাদের কথিত জিহাদে যেহেতু পুলিশ প্রধান বাধা, তাই গুলশান হামলার পর পুলিশ হত্যা করে ভয় পাইয়ে দেওয়ার নির্দেশ পেয়েছিলো রাজীব। গুলশান হামলার পর সে ঢাকাতেই অবস্থান করছিল, কল্যাণপুরের আস্তানায় অভিযানের পর যখন রাজীবের নাম আসে তখন সে গা ঢাকা দেয়। শুক্রবার আবার সে ঢাকায় আসছিলো বলে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। এমন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, গুলশান হামলা ছাড়াও কমপক্ষে ২২টি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজীব গান্ধী। তার মধ্যে অন্যতম জাপানী নাগরিক হোসিও কোনিও হত্যা, টাঙ্গাইলের দর্জি নিখিল হত্যা, পাবনার পুরোহিত নিত্যরঞ্জন পান্ডে হত্যা, রংপুর মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা, কুষ্টিয়ার হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার সানাউর হত্যা, পঞ্চগড়ের পুরোহিত যুগেশ্বর হত্যা, দিনাজপুরের হোমিও চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ হত্যা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যা। কিছু হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পায় রাজীব ছিলো আবার কিছু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলো।
**গুলশান হামলার পরিকল্পনাকারী রাজীব গান্ধী গ্রেফতার
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
পিএম/বিএস