তিনি বলেন, ‘আমরা দানব নয়, মানবের সমাজ গড়তে চাই। এ জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকতে হবে, রাখতে হবে।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সোনারগাঁও বাংলাদেশ লোকজ ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মাসব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে শিক্ষা নেই, আছে শুধু পরীক্ষা। জিপিএ-৫ পেয়ে উচ্চশিক্ষায় গিয়ে আর এগোতে পারছে না। আমাদেরকে এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতিচর্চার সমন্বয় ঘটাতে হবে। সমাজে মানবিকতার বিকাশ ঘটাতে না পারলে সরকারের সকল উন্নয়ন ব্যহত হয়ে যাবে’।
‘জঙ্গিবাদ শেকড় গাড়তে শুরু করেছে। এ থেকে পরিত্রাণেও প্রয়োজন মানবিক শিক্ষা’।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত নাসিমা আক্তার প্রমুখ।
লোকজ উৎসব প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৫৪ জন কারুশিল্পী মেলায় অংশ নিচ্ছেন। তাদের জন্য ২৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁ ও মাগুরার শোলাশিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি ও মুখোশ, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁওয়ের হাতি, ঘোড়া, পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকশিকাঁথা, বেতের কারুশিল্প, মুন্সীগঞ্জের শীতল পাটি, ঠাকুরগাঁওয়ের বাঁশের কারুশিল্প, কুমিল্লার তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও সিলেটের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা শিল্প এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার মৃৎশিল্প বিভাগের মাটির কারুশিল্প এ মেলায় স্থান পাচ্ছে।
মেলায় গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম ‘মৃৎশিল্পের প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন’ শিরোনামে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকা ও রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জন শিল্পী এ প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন।
মেলায় কর্মরত কারুশিল্পীর কারুপণ্য উৎপাদন প্রদর্শনীর ২৭টি স্টলসহ সর্বমোট ১৯৩টি স্টল থাকবে। এর মধ্যে ৪৬টি হস্তশিল্প, ৪৩টি পোশাক, ৩৫টি স্টেশনারি ও কসমেটিক্স, ২৫টি খাবার ও চটপটির স্টল এবং ১৭টি মিস্টির স্টল রয়েছে।
লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে লোকজ নাটক, লোক কাহিনীর যাত্রাপালা, বাউল গান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালি গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান, লালন সংগীত, মাইজভাণ্ডারি গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গায়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের মণিপুরি ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তি-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথিপাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি অনুষ্ঠানও হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
এএসআর