ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডাকাত ধরতে পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
 ডাকাত ধরতে পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান জরুরি প্রেসব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখছেন পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান

বগুড়া: শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার ঘটনা। মাইক্রোবাস নিয়ে একদল ডাকাত বগুড়া শহরের ব্যস্ততম নিউমার্কেটে অবস্থিত আল হাসান জুয়েলার্স স্বর্ণের দোকানে হানা দেয়। পরপর ৭-৮টি শক্তিশালী ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় তারা।

আতঙ্কিত হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে মানুষ। এ ফাঁকে ডাকাত সদস্যরা দোকানে ঢুকেই মালিক গুলজার রহমানকে গুলি করে।

কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। তাদের হামলায় আহত হন বেশ কয়েকজন। পরে বস্তায় ভরে স্বর্ণালংকার লুটে মাইক্রোবাসযোগে পালিয়ে যায় ডাকাতদল।

ডাকাতদের হামলায় আহতরা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রায় ঘণ্টাব্যাপী শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে ‘দৈনিক সময়ের সংবাদ’ স্টিকার যুক্ত মাইক্রোবাস, গুলিবিদ্ধ ডাকাত সদস্য আলমগীর হোসেনকে আটক ও লুটকৃত বস্তাভর্তি স্বণাংলকার উদ্ধার করে।

আটক ব্যক্তি পাবনার আতাইকুলা উপজেলার কাজীপুর গ্রামের টুকু লস্করের ছেলে বলে জানা গেছে। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সোয়া ১০টার দিকে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান শ্বাসরুদ্ধকর এ অভিযান সম্পর্কে জানাতে তার সম্মেলন কক্ষে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন।

তিনি বলেন, ডাকাতদলকে ধরতে দ্রুত খবরটি ওয়ারলেসের মাধ্যমে জেলার সব থানাকে জানিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটিকে প্রথমে শহরের বনানী এলাকায় আটকানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু চেষ্টা ব্যর্থ হলে, ধাওয়া করে শাজাহানপুর উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ফটকি ব্রিজে এবং পরবর্তীতে বন্দর এলাকায় মাইক্রোবাসটি থামানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু সেখানেও তাদের আটকাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ।

এ সময় উপজেলার বারুনিঘাটা থেকে আড়িয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়কে ডাকাতদল পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে পরপর ককটেল ছুড়তে থাকে। পুলিশের পক্ষ থেকেও পাল্টা গুলি ছোড়া হয়।

শেষে নয়মাইল এলাকায় মহাসড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে পুলিশ সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাইক্রোবাসটিকে (ঢাকা মেট্রো চ ১৫-৯১৭৩) আটক করতে সক্ষম হয়।

এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ডাকাত সদস্য আলমগীর হোসেনকে আটক করা হয়। তবে অন্যরা পালিয়ে যায়। লুট হওয়া বস্তাভর্তি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। উদ্ধার করা হয় এক ব্যাগ ককটেল। পরে তা নিষ্ক্রিয় করা হয়।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর ডাকাত সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আটক ডাকাত সদস্যের ব্যাপারে পাওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অভিযান সফল করায় তিনি পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। এ সময় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল, আব্দুল জলিল, গাজিউর রহমান রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘন্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।