বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন দুই প্রতিবন্ধী ছেলের মা রুমানা নাজমীন (৩০)। বড় ছেলে ইরফান (১২) শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধি ও বাক প্রতিবন্ধী।
খুলনার আড়ংঘাটা সরদার ডাঙ্গা পূর্বপাড়ার অসহায় এক দরিদ্র পরিবারে এই তিন প্রতিবন্ধীর মানবেতর জীবনযাপন। নাজমীনের স্বামী আরিফ মোল্লা ইজিবাইক চালক। সরকারি ও বেসরকারিভাবে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই পরিবারটি অনাহার আর অর্ধাহারে বিনা চিকিৎসায় দিনযাপন করছে। পরিবারের তিন প্রতিবন্ধীকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আরিফ।
প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনে সরকারি উদ্যোগ যেমন রয়েছে তেমনি প্রতিবন্ধীদের জন্য বেসরকারি অনেক সংস্থাও রয়েছে। কিন্তু এ পরিবারটি কোনো সহযোগিতাই পায়নি বলে জানান আরিফ।
তিনি বলেন, তিনজনের চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন আমি নিঃস্ব। পরিবারের করুণ চিত্র তুলে ধরে এসএসসি পাস নাজমীন জানান, অভাব-অনটনে তাদের সংসার আর চলছে না। অর্থাভাবে ছেলেদের ভালো করে চিকিৎসাও করাতে পারেন নি।
জীবনযুদ্ধে প্রতিনিয়ত ধুঁকতে থাকা এ মা বলেন, ছেলেরা প্রতিবন্ধী ভাতা পায় না। আমি আগে পেতাম। ৬ মাস ধরে পাই না। সমাজের সবাই আমাদের বাঁকা চোখে দেখে। অবহেলা, অপমান করে। অভিশাপ দেয়।
তিনি জানান, ২০০২ সালে তার বিয়ে হয়েছে। একটা চাকরির জন্য অনেকের কাছে গেছেন। কিন্তু হয়নি। ১৫ বছর ধরে যুদ্ধ করতে করতে তিনি এখন ক্লান্ত।
নাজমীন টিভিতে দেখেছেন অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল প্রতিবন্ধীদের সহযোগিতায় কাজ করেন। নাজমীন তার সঙ্গে দেখা করে কষ্টের কথা জানাতে চান।
৫ নম্বর আড়ংঘাটা ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর (৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড) ফারজানা বিউটি বাংলানিউজকে বলেন, অভাবী এই পরিবারের তিনজনই প্রতিবন্ধী। সময় মতো ছেলেদের চিকিৎসা করা গেলে তারা হয়তো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারতো। প্রতিবন্ধী মাকে কার্ড করে দিয়েছিলাম। ব্যাংকের একটি জটিলতার কারণে ৬ মাস হলো ভাতা পাচ্ছেন না তিনি। সামনে আবার পাবেন।
দুই বাচ্চা পায় না কেন জানতে চাইলে তিনি সীমিত কোটার কারণ উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৬
এমআরএম/আরআর/জেডএস