পাশাপাশি একটি উন্নত দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং আইনের শাসন সুসংহত করতে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
রোববার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দশম জাতীয় সংসদের ১৪তম অধিবেশনে ভাষণ প্রদানকালে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি ২০১৭ সালের জাতীয় সংসদের শুরুর অধিবেশনে ১১৯ পৃষ্ঠার ভাষণ দেন। এসময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, প্রধান বিচারপতিসহ বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি বলে, একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে থেকে জাতির অগ্রযাত্রার আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবরূপ দিতে বর্তমান সরকারের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করতে, দেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে দেশে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে আবারও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে, আসুন ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সংসদ দেশের আপামর জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আলোকিত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে সরকারি দল ও বিরোধী দলসহ সবাইকে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হাঁটছি, সে পথ ধরেই বাংলাদেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশ হিসাবে আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হবে। ‘রূপকল্প-২০২১’ এবং দিনবদলের সনদের ভিত্তিতে প্রণীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং এ কার্যক্রমে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ফলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে, এটাই জাতির প্রত্যাশা। ‘রূপকল্প-২০২১’, দিনবদলের সনদ ও এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং বিভিন্ন পরিকল্পনায় গৃহীত কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির এ প্রত্যাশা অবশ্যই পূরণ হবে। আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী যে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে সুশাসন সুসংহতকরণ, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ এবং জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা এসব লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হব।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
এসকে/এসএম/এমজেএফ