ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাণিজ্যমেলায় অভিনব পদ্ধতিতে টোকাইদের ভিক্ষাবৃত্তি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
বাণিজ্যমেলায় অভিনব পদ্ধতিতে টোকাইদের ভিক্ষাবৃত্তি! বাণিজ্যমেলায় অভিনব পদ্ধতিতে টোকাইদের ভিক্ষাবৃত্তি

ঢাকা: বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ। হালকা শীতের সঙ্গে মিষ্টি রোদ। পরিবার-পরিজন নিয়ে মেলা ঘুরে হাত ভরে জিনিসপত্র কিনছেন মানুষ। মেলা প্রাঙ্গণ জুড়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের কোলাহল। কোলাহলের মধ্যে মেলা প্রাঙ্গণে বস্তা বিছিয়ে হাঁটু মুড়ে শুয়ে রয়েছে আট বছর বয়সী দুইটি শিশু।

খালি গাঁয়ে শুয়ে থাকা মেয়ে শিশুটির শরীর জুড়ে শীতের ছাপ। দীর্ঘদিনের অযত্নে শরীরের চামড়া ফেটে গেছে।

ঘাড় পযর্ন্ত পড়া উস্কখুস্ক চুল। মেয়েটির পাশে রাখা সাদ‍া রঙের বাটি। তাতে দুই টাকা, ১০ টাকার কয়েকটি নোট। চোখ বুজে শুয়ে থাকলেও মাঝে মাঝে পিট পিট করে বাটির দিকে তাকাচ্ছে।

মেলায় আসা দর্শনার্থীদের কেউ টাকা দিচ্ছেন, কেউ কেউ পাশে দাঁড়িয়ে শীতের মধ্যে কাপড় গাঁয়ে দেইনি বলে দীর্ঘশ্বাসও ছাড়ছেন।

বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণে এই অভিনব পদ্ধতিতে ভিক্ষা করা এসব শিশু সাধারণত টোকাই। মেলায় আগতদের সহানুভুতি পাওয়ার জন্য বেছে নিয়েছেন ভিক্ষার অভিনব পদ্ধতি।

মেলায় অভিনব পদ্ধতিতে টোকাইদের ভিক্ষাবৃত্তিকথা বলতে চাইলে- প্রথমে চোখ বুজে থাকে। পরে জানা গেল এর মধ্যে একজনের নাম সুমী। মিরপুর বেড়িবাঁধে মায়ের সঙ্গে থাকে। তার জন্মের পর জন্মদাতা তাদের রেখে পালিয়ে গেছে। অসুস্থ হওয়ায় মা ভিক্ষা করে। আর সুমি ময়লা আর্বজনায় প্লাস্টিকের বোতল, কাগজ টোকায়। তবে, বাণিজ্যমেলা শুরুর পর এভাবে প্রাঙ্গণে শুয়ে ভিক্ষা করছে

সুমি বাংলানিউজে বলে, পুলিশ ভিক্ষা করতে দিতে চায় না। সুযোগ প‍াইলে ভিক্ষা করি। কয়েকজন লোক আছে, যারা ম্যানেজ করে। সারাদিন থাকলে ১০০-২০০ টাকা ইনকাম হয়।  

সুমির একটু দূরে শুয়ে একই পদ্ধতি ভিক্ষা করছে তারেই চাচাত বোন ঝর্ণা। তার কাছে গিয়ে দেখা গেল বাটি খালি। মাথায় বালিশ হিসেবে ব্যবহার করার একটি ব্যাগে সে টাকা রেখে দিয়েছে! কিছুক্ষণ পর দেখা গেল, ময়লা কাপড়-চোপড় পরা দুইজন নারী সুমি ও ঝর্ণার ব্যাগ দুইটি নিয়ে গেল।

বাণিজ্য মেলায় অভিনব পদ্ধতিতে টোকাইদের ভিক্ষাবৃত্তিকথা বলতে চাইলে রেগে গিয়ে ত‍ারা বলেন, ‘আপনাগো এত চক্ষে লাগে কেন? কইরা খাইলে সহ্য হয় না,খবরদার ছবি তুলবেন না। ’

ঝর্ণার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এভাবে তাদের ভিক্ষা করার ব্যবস্থা করে দিয়েছে তারা। এ জন্য কিছুক্ষণ পর এসে টাকা নিয়ে যায়। দিন শেষে ৫০ টাকা হাতে ধরিয়ে দেয় বলে জানায় ঝর্ণা।

২০ মিনিটের মতো দাঁড়িয়ে থেকে দেখা গেল, শীতের মধ্যে এভাবে খালি গায়ে শুয়ে থেকে মেলায় আগতদের ভালোই দৃষ্টি আর্কষণ করতে পেরেছে সুমি, ঝর্ণা। বাটিতে একের পর এক দুই টাকা, ১০ টাকার নোট পড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭

এমসি/পিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।