ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পুঠিয়ায় আটক মুসা রাজাকার কারাগারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭
পুঠিয়ায় আটক মুসা রাজাকার কারাগারে

রাজশাহী: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কুখ্যাত রাজাকার আবদুস সামাদ ওরফে ফিরোজ খাঁ ওরফে মুসাকে (৬০) কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে রাজশাহীর আমলি আদালতে (২) হাজির করে পুঠিয়া থানা পুলিশ।

পরে আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার তাকে কারাগারে পাঠনোর নির্দেশ দেন।

এ সময় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তাকে আদালত থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠনো হয়।

রাজশাহীর পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান  বিষয়টি বাংলানিউজকে জানান।

তিনি জানান, কুখ্যাত মুসা রাজাকার মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত। তার নথি ট্রাইব্যুনালে রয়েছে। ২০১৬ সালের (জিআর-২৭৭/১৬) বিস্ফোরক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরে মূল নথি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এর আগে গতকাল রোববার (২২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

রাজশাহীর পুলিশ সুপার মোয়াজ্জেম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আব্দুস সামাদ ওরফে ফিরোজ খাঁ ওরফে মুসা মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত।

তাকে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা বাজার থেকে আটক করা হয়। এর আগে মুসার হাতে নিহত উপজেলার পশ্চিমভাগ গ্রামের শহিদ আবদুস সামাদের স্ত্রী রাফিয়া বেগম অভিযোগ দাখিল করেন।  ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

চলতি মাসের শুরুতে সরেজমিনে পুঠিয়ার বাঁশবাড়িয়া,পশ্চিমভাগ এবং গোটিয়া গ্রামে আদিবাসী ও বাঙালিদের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর ঘটনার তদন্ত করা হয়।

এ সময় মুসার হাতে নিহত বাঙালি ও আদিবাসীদের স্বজনরা সাক্ষ্য দেন।

এদিকে, অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আদিবাসীদের সঙ্গে জমি বিনিময় করে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘী থানার ইসলামপুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে মুসা ও তার নিকটাত্মীয়রা পুঠিয়ায় এসে বসবাস শুরু করেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুসার বয়স ছিলো ২০ থেকে ২২ বছর। ওই বয়সেই মুসা পাকিস্তানের পক্ষে এলাকার যুবকদের নিয়ে একটি দল গঠন করেছিলেন। তার নেতৃত্বে এ দল এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালায়। একাত্তরের ১২ এপ্রিল পাকহানাদার বাহিনী পুঠিয়া আক্রমণ করে মানুষ হত্যা ও অগ্নিসংযোগ শুরু করলে মুসা হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয়।

১৯ এপ্রিল হানাদার বাহিনীর ৩০-৪০ সদস্যকে নিয়ে সে বাঁশবাড়িয়া গ্রামে যায়। সেখান থেকে ২১ জনকে আটক করা হয়। তাদের নিয়ে রাখা হয় গোটিয়া গ্রামের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের বাড়িতে। সেখানে দিনভর নির্যাতন করে ১৭ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর চারজনকে হত্যা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭

এসএস/এএটি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।