কিন্তু তা না করেই ইচ্ছামতো বিল আদায় চলছে।
এমন অভিযোগ মহানগরীর পূর্ব বানিয়াখামার এলাকার গ্রাহক শেখ রফিকের।
তার অভিযোগ, প্রায় এক বছর ধরে তার পানির মেশিনঘর তালা বন্ধ। কেউ আসেন না মিটার দেখতে। প্রায় প্রতি মাসে রিডিং ও বিলের টাকা বাড়ছে। গরম মৌসুমের চেয়ে শীত মৌসুমেও রিডিং ও বিল বাড়ছে। সময়মতো বিলও হাতে পান না। বিল পরিশোধের দু-একদিন আগে সিড়িতে বিল ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়।
নগরীর তালতলা মসজিদ রোডের আকলিমা খাতুন অভিযোগ করেন, ওয়াসা চলছে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল খুশিমতো। তারা মিটার যাচাই না করে অফিসে বসেই মনগড়া রিডিং লিখে বিলের কপি ধরিয়ে দিচ্ছেন গ্রাহকদের হাতে। এসব ভৌতিক বিল পরিশোধে গ্রাহকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতি মাসেই বিল বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আকলিমার স্বামী আবুল কাশেম জানান, গত এক বছরে দুই বার মিটার দেখে বিল করেছে। বাকি সময় আনুমানিক বিল করেছে। ওয়াসা প্রতিষ্ঠার পর সেবার মান বাড়েনি। সেই সাপ্লাইয়ের পানির মতোই রয়ে গেছে। অনেক সময় ময়লা পানি আসে। কেবল বেড়েছে বিলের বোঝা। ভৌতিক বিলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। সমস্যা নিয়ে কার্যালয়ে ধরনা দিয়েও কোনো সমাধান মিলছে না। এমনকি মাসিক পানির বিলের গ্রাহক কপিতে দেওয়া টেলিফোন নম্বরে ফোন করলেও কেউ রিসিভ করেন না।
ওয়াসার সেবার নামে খেয়ালিপনা ও মনগড়া কার্যক্রমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এখানকার হাজারও গ্রাহক। ভৌতিক বিলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত অভিযোগ থাকলেও কোনো প্রতিকার করছেন না সংশ্লিষ্টরা।
কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, অবৈধ সংযোগে সৃষ্ট ঘাটতির বোঝা বৈধ গ্রাহকদের ঘাড়ে চাপাতেই তারা ভৌতিক বিল করে থাকেন। বৈধ গ্রাহকরা অভিযোগ করলে লাইন কেটে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। অনেক সময় লাইন কেটে দেয়। কাণ্ডজ্ঞানহীন এ কার্যক্রম থেকে রেহাই পেতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ০৫ মার্চ খুলনা সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ বিভাগ থেকে খুলনা ওয়াসা প্রতিষ্ঠিত হয়। মোট প্রায় ২০ হাজার ৪শ’ জন গ্রাহকের মধ্যে অ্যাকটিভ আছে সাড়ে ১৭ হাজার। এর মধ্যে মিটারে গ্রাহক ৮ হাজার ২শ’ ৮২ জন।
খুলনা ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক খাদেমুল ইসলাম মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রথম দিকে কিছু সমস্যা ছিলো। অভিযোগের পর সেগুলোর সমাধানে আমি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গ্রাহকদের বাড়িত বাড়ি গিয়ে সমাধান করেছি। কেউ সমস্যা নিয়ে এলে সমাধান করে দিচ্ছি। তারপরও যদি কারও কোনো অভিযোগ থাকে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
মিটার না দেখে বিল করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই মিটার দেখে বিল করার বিধান রয়েছে। যদি কেউ না করেন, তার ব্যাপারে অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
এমআরএম/এএসআর