সরকারিভাবে গাড়িগুলো কনডেম ঘোষণার জন্য ২০০৯ সাল থেকে প্রক্রিয়া চলছে। এ জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটিও হয়।
গাড়ি ৩টির মধ্যে একটি পিকআপ (সিলেট-ঘ-০২-০৪৮), অ্যাম্বুলেন্স সিলেট-ব-৬১৬৮ ও একটি মিনি ট্রাক সিলেট-ট-৫৪১০।
এরমধ্যে ২০০৬ সাল থেকে বিকল ছিল সিলেট-ঘ-০২-০৪৮ নাম্বার পিকআপটি। গাড়ির স্ক্র্যাবের মূল্য ৮ হাজার টাকা ধরে কমিটি মতামত দেয়, ব্যবহার উপযোগী করতে মেরামতে ৫২ গুণ বেশি তথা খরচ হবে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। মেরামত পরবর্তী আনুমানিক মূল্য ধরা হয় ৩ লাখ।
অ্যাম্বুলেন্স সিলেট-ব-৬১৬৮ বর্তমান স্ক্রাবের মূল্য ধরা হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। মেরামতে ৩২ গুণ বেশি খরচ হবে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। যার পরবর্তী মূল্য দাঁড়াবে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
এছাড়া মিনি ট্রাকের (সিলেট-ট-৫৪১০) স্ক্রাবের মূল্য ধরা হয় ২০ হাজার টাকা। গাড়িটি ব্যবহার উপযোগী করতে প্রায় ৩৫ গুণ তথা ৭ লাখ টাকা খরচ হবে। মেরামত পরবর্তীতে মূল দাঁড়াবে ৪ লাখ ৮০ হাজার।
তারপরও স্ক্র্যাবগুলো চুরির ঘটনা জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট শাখায় কর্মরতদের দিয়ে কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরির কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এ ঘটনায় সিসিকের ৩ জন কর্মকর্তাকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্তে যাদের জড়িত পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন-সিলেট সিটি করপোরেশনের সচিব বদরুল হক, সদস্য সচিব নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ), বর্তমানে করপোরেশনের যান্ত্রিক শাখায় কর্মরত রুহুল আলম এবং সদস্য করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আলী আকবর।
মেয়র বলেন, বিআরটিএ সিলেটের সরকারি যানবাহন ও কনডেমনেশন শাখা থেকে এই গাড়িগুলোর বিষয়ে করপোরেশনকে ২০১৬ সালের ১৮ মে একটি প্রতিবেদন দেন বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিন) এনায়েত হোসেন মন্টু ও মোটরযান পরিদর্শক কেশব কুমার দাস।
কনডেমনেশন শাখা থেকে করপোরেশনে প্রতিবেদন দাখিলের পর নিয়মানুযায়ী এসব গাড়ি বিক্রির জন্য টেন্ডার আহ্বান করার কথা। কিন্তু রহস্যজনক কারণে টেন্ডার আহ্বান না করে করপোরেশনের পরিবহন শাখার একটি চক্র গাড়িগুলো অযত্নে ফেলে রেখে মূল্যবান যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে বিক্রি করে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর সিসিকের অস্থায়ী কার্যালয় থেকে (পীর হাবিবুর রহমান পাঠাগার) গাড়িগুলো চুরি হয়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় তিনটি গাড়ি গায়েবের কথা উল্লেখ করে জিডি করা হয়। এর একমাস পর ওই জিডি তদন্ত চেয়ে আদালতে আবেদন করেন কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেনু চন্দ্র। ৩টি গাড়ি নিখোঁজের ঘটনার পরপরই গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ এবং সিলেট সিটি করপোরেশনে তোলপাড় শুরু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আরও বলেন, সিসিকের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ৯ মাস দায়িত্ব পালন শেষে কারাগারে যাই। বেরিয়ে আসার পর জলাবদ্ধতা নিরসন, বিদ্যুৎবাতি, ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ, হকারদের পুনর্বাসন ও রাস্তার সংস্কার-সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড শেষ করা হয়েছে।
তবে হকার উচ্ছেদ ও রাস্তা বড় করা হলেও অবৈধ স্ট্যান্ড বন্ধে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেন, সিসিকের একার পক্ষে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
এনইউ/আরআর