২০১১ সালে একই ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছিলো সরকার। ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ইনল্যান্ড কন্টেইনার রিভার পোর্ট অ্যাট আশুগঞ্জ’ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিলো ২৪৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
অবশেষে চুক্তি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তৃতীয় ধাপের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) বাস্তবায়নে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট লাইন ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ফলে প্রথম ধাপে এক বিলিয়ন ডলার ও দ্বিতীয় ধাপে দুই বিলিয়ন ডলারের এলওসি’র ধারাবাহিকতায় এবারের ধাপে হ্রাসকৃত সুদে নমনীয় শর্তের নতুন এ ঋণ পেল বাংলাদেশ। টাকার অংকে যার পরিমাণ প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা (এক ডলার সমান ৮০ টাকা ধরে)। ফলে সব ধরনের শর্তপূরণ করায় ভারতের তৃতীয় এলওসি’র আওতায় বাস্তবায়িত হবে প্রকল্পটি।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) বেগম জিকরুর রেজা খানম বাংলানিউজকে বলেন, ভারতের প্রথম এলওসি’র আওতায় আশুগঞ্জ নদী বন্দর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিলো। এই প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালে আমরা জমি অধিগ্রহণ করতে পারিনি ফলে ভারতের ঋণ পাইনি। এখন আমরা প্রয়োজনীয় শর্তপূরণ করায় ভারতের ঋণে নদী বন্দরটি নির্মাণ করবো। ভারত আমাদের ৪৩১ কোটি টাকা ঋণ দেবে।
জিকরুর রেজা খানম আরও বলেন, আশুগঞ্জে আন্তর্জাতিক মানের নদী বন্দর নির্মাণে আর বাধা নেই। আশা করছি জুন ২০২০ সালের মধেই সব ধরনের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি হবে এখানে।
নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট ও ট্রেড প্রট্রোকল চুক্তির অধীনে আশুগঞ্জকে ‘পোর্ট অব কল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পোর্ট অব কল হলেও এমন বন্দর যেখানে দেশের ভেসেলসমূহহের লোডিং আনলোডিং সুবিধাদি থাকে। অর্থাৎ ট্রানশিপমেন্ট হয়ে থাকে। প্রট্রোকল অনুযায়ী বাংলাদেশের ট্রাক-ট্রেইলার ভেসেল থেকে কার্গো ট্রানশিপগুলো আশুগঞ্জ থেকে বর্ডার পর্যন্ত পরিবহন করবে। আশুগঞ্জ ও কলকাতা নৌরুটের মাধ্যমে কন্টেইনারগুলো ভেসেলের মাধ্যমে আগারতলা পর্যন্ত পরিবাহিত হবে।
আশুগঞ্জ বন্দর দিয়ে বছরে প্রায় চার লাখ ‘টোয়েন্টিফিট ইক্যুভেলেন্ট ইউনিট (টিইইউ)’ কনটেইনার যাবে। এর প্রায় পুরোটাই ভারতীয় পণ্য। আর্ন্তজাতিক মানের এ বন্দর চালু হলে মোংলা এবং চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি আশুগঞ্জে পণ্যবাহী জাহাজ আসতে পারবে ও আশুগঞ্জে শিল্পায়নের আরো সুযোগ তৈরি হবে। প্রায় ৮৩১ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে নদী বন্দর স্থাপনে।
ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট ও ট্রেড প্রটোকল চুক্তির অধীন বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহার করে ভারতের একস্থান থেকে অন্যস্থানে কন্টেইনার পরিবহন করা হবে। কার্গো ট্রাফিকের প্রয়োজনে বহুমুখী হেটি ও ট্রানজিট সেডও নির্মাণ করা হবে।
ভূমি অধিগ্রহণের পাশাপাশি কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ে সংগ্রহ করা হবে ভারী ইক্যুইপমেন্ট। পরামর্শক ডিজাইন ও সুপারভিশন কাজের জন্য লোকবলও থাকবে। অবকাঠামো সুবিধা, পোর্ট ওয়ার্ক ও কার্গো টার্মিনাল অবকাঠামো হবে আন্তর্জাতিক মানের।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৭
এমআইএস/এমজেএফ