ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মর্নিং শোজ দ্য ডে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৭
মর্নিং শোজ দ্য ডে! দুই নম্বর টার্মিনালের সামনে ময়লা ফেলার ড্রাম। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ‘বিমানবন্দর একটি দিনের ভোর বেলার মতো। সকালটা দেখে যেমন সারাটা দিন সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যায় তেমনি একটি দেশের বিমানবন্দর দেখে সেই দেশটা সম্পর্কে ধারণা নেয় বিদেশিরা। ‘মর্নিং শোজ দ্য ডে'।

আমাদের বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিদেশিরা যে পরিবেশ দেখবেন পুরো দেশ সম্পর্কেও তাদের তেমন ধারণাই জন্মাবে। কিন্তু এটা যেন কারো চিন্তাতেই আসে না।

বাইরে ডাস্টবিনের দুর্গন্ধ যেন তাদের নাকেই লাগে না। ’
 
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) অনেকটা ক্ষোভের সাথে বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী এস কে কাজল।
 
এ দিন বিমানবন্দর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দুই নম্বর টার্মিনালের সামনে ময়লা ফেলার জন্য কয়েকটি ঢাকনাবিহীন ড্রাম রাখা হয়েছে। ঢাকনা না থাকার কারণে এ ড্রামগুলোতে রাখা ময়লা আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আবার এই দুর্গন্ধের কারণে সেখানে কুকুরের উৎপাতও লক্ষ্য করা গেছে।
 
এছাড়া ড্রামগুলোর বাইরের অংশেও ময়লা আবর্জনা লেগে থাকায় সেগুলো দেখেও অনেকে বিব্রত হচ্ছেন। তবে এর আগে বাইরে কোনো ডাস্টবিনই ছিলো না। দর্শনার্থীরা তখন যেখানে সেখানে ময়লা ফেলতো। বর্তমানে ময়লা ফেলার জন্য সারি সারি এসব ড্রাম বসিয়ে ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে দর্শনার্থীদের দাবি বিমানবন্দরের মতো স্থানে ড্রাম না রেখে সুদৃশ্য কিছু ডাস্টবিন রাখতে পারতো কর্তৃপক্ষ।
 
তবে এতদিন টার্মিনালের ভেতরের অপেক্ষারুমে নোংরা পরিবেশ থাকলেও ইদানিং তা বদলে গেছে। ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইউসুফ বিমানবন্দর এলাকায় দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে পরিবেশ বদলাতে ‘ময়লা দিন টাকা নিন’ কৌশল গ্রহণ করেন। আর তার সেই কৌশলের কারণেই অপেক্ষারুমের পরিবেশের এই পরিবর্তন বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীরা।
 
ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফের কৌশল অনুযায়ী কোনো পানীয় বা পণ্য বিক্রির সময় দোকানি ৫ টাকা বেশি দাম রাখবে এবং ওই পানীয়ের বোতল বা আবর্জনা ফিরিয়ে দিলে আবার ৫ টাকা ফেরৎ দেবেন দোকানি। তবে কেউ আবর্জনা যত্রতত্র ফেলে রেখে চলে গেলে অন্য কেউ কিংবা পরিচ্ছন্ন কর্মীরা তা সংশ্লিষ্ট দোকানে জমা দিয়ে পিস হিসেবে টাকা নিয়ে নেবে। তার এই উদ্যোগে ভেতরের পরিবেশ বদলে গেলেও বাইরে সৃষ্টি হয়েছে নতুন ঝামেলা।
 
নিজের ছোটভাইকে রিসিভ করতে আসা জাফর উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশের বিমানবন্দরের দৃশ্য দেখলে আসলে কষ্টই লাগে। আমি ওমানে ছিলাম, সেখানে বিমানবন্দরে আপনি কোনো কাগজের টুকরাও পাবেন না। কেউ কোনো ময়লা ফেললে সাথে সাথেই তা তুলে নিয়ে যায় নিরাপত্তাকর্মীরা। এছাড়া ময়লা ফেলার স্থানগুলোও আমাদের এখানকার মতো যেখানে সেখানে রাখা নাই। নির্দিষ্ট স্থানে ডাস্টবিন রাখা আছে, সেখানে ময়লা ফেলতে হয়। সেগুলো দেখতেও অনেক সুন্দর। আমাদের মতো ড্রাম নয়। তবে কয়েকদিন আগে তো আমাদের এখানে একেবারে কিছুই ছিলো না। মানুষ যেখানে সেখানে ময়লা ফেলতো। এখন তাও ড্রাম বসানো হয়েছে। আমি আশা করবো সামনে আরো ভালো কিছু হবে।
 
এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইউসুফ বাংলানিউজকে বলেন, এগুলো প্রাথমিকভাবে থাকলেও স্থায়ীভাবে থাকবে না। শুরুতে এখানে ঢাকনাসহ কিছু বিন রাখা হয়েছিল, কিন্তু মানুষ ঢাকনা তুলে ময়লা ফেলতো না। এ জন্য সেগুলো সরিয়ে ড্রাম দেওয়া হয়েছে। এখন সবার মাঝে সচেতনতা ক্রিয়েট হয়েছে। চাইলেই যত্রতত্র ময়লা ফেলতে পারবে না। এজন্য আমি ওয়ালটনের সাথে যোগাযোগ করেছি ৫০টি ময়লা ফেলার আধুনিক বিনের স্পন্সরের জন্য। তারা আমাদেরকে ৩০টি দিতে চেয়েছে। আশা করছি দুই সপ্তাহের মধ্যে এটা রিপ্লেস হয়ে যাবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৭
এসআইজে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।