যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো ২-৩ ঘণ্টার অপেক্ষায় নৌরুট পার হতে পারলেও পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দেড় থেকে দুই দিন করে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নৌরুট পারাপার হতে আসা এসব যানবাহনের শ্রমিক ও সাধারণ যাত্রীদের।
এ ভোগান্তি ও যানজটের জন্যে প্রধান সমস্যা হিসেবে ঘাট পন্টুন এলাকার কাদামাটিকে দায়ী করছেন ঘাট সংশিষ্টরা। পণ্যবাহী ট্রাক চালকদের অভিমতও প্রায় একই। শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ঘাট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ভুক্তভোগী ট্রাক চালকদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল বাংলানিউজের।
ফেরিঘাট এলাকার বাণিজ্য বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক নাছির চৌধুরী জানান, পদ্মা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় ঘাটের পন্টুনগুলোকে হাই ওয়াটার থেকে মিডল ওয়াটারে নামানো হয়। পরে সেই পন্টুনগুলোকে আবার লো ওয়াটারে নামানো হয়। গেল কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ঘাট পন্টুনে ওঠার রাস্তাও কাদা মাখামাখি হয়ে যায়। যে কারণে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আনলোড করার সময় উপরে উঠতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মাঝে আটকে যাওয়া ট্রাকগুলোকে রেকার দিয়ে টেনে উঠানো হচ্ছে। এতে ফেরি থেকে ট্রাক আনলোডে সময় লাগছে আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। যে কারণে ফেরির ট্রিপ কমে গিয়ে ঘাট এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ লাইন জমে যাচ্ছে। ঘাট পন্টুনে ওঠার রাস্তাগুলো রোদে না শুকোনো পর্যন্ত এই সমস্যা চলতে থাকবে বলেও জানান নাছির চৌধুরী।
পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৪ নং ঘাট পন্টুন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পণ্যবাহী ট্রাকগুলো উঠতে বেশ সময় নিচ্ছে। মাঝে মাঝে উঠতেও পারছে না। কাদামাটিতে ট্রাকের চাকা স্লিপ করে যাওয়ার কারণে এমন সমস্যার সৃষ্টি। এ ট্রাকগুলোকে ওপরে উঠতে সহায়তা করার জন্যে টাকার বিনিময়ে অস্থায়ীভাবে কাজ করার জন্যে বেশ কয়েকজন ভাসমান শ্রমিকেরও দেখা মেলে।
হারুন শেখ নামে এমনই এক শ্রমিক বাংলানিউজকে জানান, ফেরি থেকে ওপরে ওঠার সময় অনেক পণ্যবাহী ট্রাকের চাকা স্লিপ করে পিছিয়ে যায়। ওই ট্রাকগুলোর পেছনের চাকায় কাঠের তৈরি পেলা (ঠেস দেওয়া কাঠ) দিয়ে আটকে রাখা হয়। এভাবে কোনো রকমে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকগুলোকে ওপরে উঠতে সহায়তার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন তিনি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন।
ঢাকামুখী পণ্যবাহী ট্রাকের চালক মোতালেব মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ফেরির পন্টুন থেকে ওপরের পাকা সড়কে ওঠার রাস্তায় কাদামাটি থাকার কারণে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ট্রাকগুলো নিয়ে ওপরে উঠতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর জন্যে অস্থায়ীভাবে ঘাট এলাকায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক ওই ট্রাকগুলো উপরে উঠার কাজে সহায়তা করছে। এরজন্য আবার তাদের পারিশ্রমিক হিসেবে ২০০-৩০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে।
পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকার বাণিজ্য বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন রাসেল বাংলানিউজকে জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ছোট বড় মিলিয়ে ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। সবশেষ পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় আড়াই’শ এর মতো যানবাহন নৌরুট পারের অপেক্ষায় রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৭
এইচএ/