ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডিভোর্স ঠেকাতে রাবি ছাত্রীকে অপহরণ করেন স্বামী!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
ডিভোর্স ঠেকাতে রাবি ছাত্রীকে অপহরণ করেন স্বামী! গ্রেফতারকৃত স্বামী সোহেল রানা, তার বাবা জয়নাল আবেদীন ও মাইক্রোবাস চালক জাহিদুল ইসলামকে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: বিবাহ বিচ্ছেদ ঠেকাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রীকে অপহরণ করেছিলেন তারই স্বামী সোহেল রানা। ডিভোর্স প্রত্যাহার করাতে স্ত্রীকে তুলে নিয়ে রাজধানী ঢাকায় কাজী অফিসেও নিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই ওই ছাত্রীকে উদ্ধার  করে পুলিশ।

একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে মেয়েটির স্বামী সোহেল রানাকে। সোহেলের বাবা জয়নাল আবেদীনকে নওগাঁর পত্মীতলা এবং অপহরণে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের চালক জাহিদুল ইসলামকেও ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে গ্রেফতারকৃত তিনজনকে আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।

অপহৃত ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা পরীক্ষা শেষে তাকেও আদালতে হাজির করে ১২২ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হবে।
 
এর আগে ঢাকা থেকে উদ্ধারের পর ওই ছাত্রী ও তার স্বামী সোহেল রানাকে শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে রাজশাহীতে আনা হয়। অপহৃতকে রাজশাহীর ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়। পরে রোববার সকালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

রোববার (১৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মাহবুবুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান আরএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমান।  ছবি: বাংলানিউজপুলিশ কমিশনার বলেন, অপহরণকারী ওই ছাত্রীর স্বামী হলেও তাকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া অপরাধ। মামলাটি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের তদন্তে আছে। তাই ঘটনাটি অপহরণ না, ওই ছাত্রী স্বেচ্ছায় গেছেন- তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি জানান, এক বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। কিছুদিন আগে স্বামীকে ডিভোর্স দেন ওই ছাত্রী। অফিসিয়ালি কার্যকর হওয়ার আগে বিচ্ছেদ ঠেকাতে স্ত্রীকে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ক্যাম্পাস থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যান তার স্বামী সোহেল রানা।

ওইদিনই সন্ধ্যায় মতিহার থানায় অপহরণ মামলা করেন ওই ছাত্রীর বাবা। মামলায় সাবেক স্বামী সোহেল রানাসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর পরই উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় পুলিশের বিশেষ টিম গঠন করা হয়।

পরে রাতে ওই ছাত্রীর শ্বশুর ও রানার বাবা জয়নাল আবেদীনকে নওগাঁর পত্মীতলা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সদর দফতরের সহায়তায় শনিবার ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার শেখেরটেক রায়েরবাজার এলাকার একটি কাজী অফিস থেকে অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার ও স্বামী সোহেল রানাকে গ্রেফতারে সমর্থ হয় মতিহার থানা পুলিশ। এর আগেই ঢাকা থেকে গ্রেফতার হন মাইক্রোবাস চালক মাইক্রোবাসের চালক জাহিদুল ইসলাম।

মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম বাংলানিউজকে জানান, মামলায় গ্রেফতারকৃতদের রোবাবর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।

গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই ছাত্রী তার আবাসিক হল থেকে পরীক্ষা দিতে বের হয়েছিলেন। হলের গেট থেকে ৫০ গজ এগোতেই তাকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান তার ডিভোর্সপ্রাপ্ত স্বামী সোহেল রানা। পরে ওই ছাত্রীর সন্ধান চেয়ে বিকাল ৪টা থেকে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
এসএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।