ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যানজট ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৭
যানজট ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে! যানজটে আটকা যানবাহন, ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: রাজধানী ঢাকাতে যানজট নতুন কোনো বিষয় নয়। এই শহরের বাসিন্দারের কাছে এটি নিত্যদিনের ঘটনা। প্রতিদিন রাজধানীবাসীর ঘণ্টার পর ঘণ্টা যেমন কর্মসময় নষ্ট হচ্ছে, তেমনি কোটি কোটি টাকার অর্থেরও লোকসান হচ্ছে।

তবে গত এক মাস ধরে ঢাকায় যানজটের সমস্যা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। সাধারণত অফিসে যাওয়ার সময় কিংবা আসার সময় যানজট বেশি থাকলেও, ইদানিং প্রায় সারাদিনই জট দেখা যায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে।

ফলে অসহায় হয়ে পড়েছেন মানুষজন।
 
বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, রাজধানী ঢাকাতে যানজটের কারণে প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় বছরে প্রায় ১১ দশমিক চার বিলিয়ন ডলার, যা দেশের মোট জিডিপির ৭ শতাংশের সমান!

শুধু অর্থনৈতিক দিক দিয়েই ক্ষতি হচ্ছে না। যানজটের কারণে রাজধানীবাসী সামাজিক, পরিবেশগত ও মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
 
গত কয়েক দিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সরেজমিনে দেখা যায়, ৫-১০ মিনিটের হেঁটে যাওয়ার রাস্তা গণপরিবহনে পার হতে সময় লাগছে এক ঘণ্টা। এছাড়া অল্প বৃষ্টিপাত হলেই ঢাকা প্রায় স্থবির হয়ে যায় যানজটে। পরিবহনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। কিন্তু কিছু করারও নেই। হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার মতো সুব্যবস্থাও নেই রাজধানীতে। মানুষ হাঁটার ফুটপাতগুলোও হকারদের দখলে। ধুলা-ময়লা পরিবেশ। এদিকে যে কয়েকটি ফুটপাত দখলমুক্ত, ধুলা-ময়লা মুক্ত; সেগুলোতে এক সঙ্গে ভালো করে তিন-চারজন মানুষ হাঁটতে পারেন না। ফলে সবমিলিয়ে যানজটের সমস্যা দিনে দিনে রাজধানীবাসীর কাছে ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে!ঢাকায় কেবল ব্যক্তিগত গাড়ি, এতে বাড়ছে জট, ছবি: শাকিল আহমেদবিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, একটি শহরে সুষ্ঠুভাবে জনগণের চলাচলের জন্য নগরীর আয়তনের ২৫ শতাংশ রাস্তাঘাট থাকা আবশ্যক, কিন্তু ঢাকতে আছে মাত্র আট শতাংশ। এছাড়া শহরের আয়তন অনুযায়ী জনসংখ্যার চাপ বেশি থাকায় যানজট দিনে দিনে বাড়ছেই।
 
যানজটের এই ভয়ঙ্কর যন্ত্রণায় অতিষ্ট হলেও এ বিষয়ে খুব একটা আশার আলো দেখছেন না নগরবাসী। প্রতিনিয়ত সীমাহীন এই ভোগান্তি পোহাতে হলেও ঠিক কীভাবে রেহায় পাবেন তা তারা জানেন না। তাই নিয়তি মনে করে অসহনীয় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষজন।
 
মো. আবুল কালাম মিরপুরের বাসিন্দা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আসলে রাস্তাঘাটে বন্দি হওয়া মানুষ! কোনো একটি জায়গায় যেতে চাইলেও যানজটের কারণে ভোগান্তি ছাড়া যাওয়া যায় না। অতিমাত্রায় যানজটের ফলে এই শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। তারপরে আবার উন্নয়ন কাজের জন্য রাস্তা হয়ে পড়েছে সরু। এতে আরও লেগেই থাকে জট।
 
জাকিয়া হায়দার রাজধানীর আদাবরের বাসিন্দা। তিনি প্রতিদিন সকালে সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যান এবং তিনি নিজেও মতিঝিলে অফিসে যান।
 
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠি। তারপর রান্না করে ৮টায় বাসে উঠলেও সময় মতো অফিসে যেতে পারি না অনেক সময়। গত একমাস ধরে রাজধানীতে যানজটের পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে।    
 
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থার (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন ৪০০ নতুন গাড়ি নামছে ঢাকায়। রাজধানীতে চলাচল করছে ১০ লাখ গাড়ি। এর মধ্যে অধিকাংশই ব্যক্তিগত গাড়ি। চাহিদা অনুযায়ী এই শহরে গণপরিবহনের সংখ্যা অনেক কম। তাই ঢাকাতে ব্যস্ত সময়ে গণপরিবহনের স্বল্পতা যাত্রীদের ভোগান্তির অন্যতম প্রধান কারণ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৭
এমএসি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।