তিনি বলেন, ‘এত সন্ত্রাসী গ্রেফতার হয়েছে, জেএমবির সদস্য গ্রেফতার হয়েছে, অনেকের ফাঁসির শুনানি পর্যন্ত বাকি- সেগুলোর জন্য সময় নেই। অথচ তারা এই সমস্ত খুচরা জিনিস নিয়ে সময় কাটায় কেন?’
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে সংসদ অধিবেশনে জেএসসি ও পিইসি দুই পরীক্ষার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট পাবলিক পরীক্ষা হিসেবে জেএসসি কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপরও পরীক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকায় আদালত অবমাননা হচ্ছে কি না এ নিয়ে সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে প্রশ্ন তোলেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ।
জবাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এই সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে। অতএব বিষয়টা কোনোভাবেই বেআইনি নয়। আমাদের শিক্ষানীতিতেও বিষয়টি রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিচ্ছি। হয়তো দেখা যাবে কোনদিন রিট করে বসে আছে কেন বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে কিছু লোক যেন আছেই, অনবরত রিট করা, আর এটার ওপরে আলোচনা করা। এই পরীক্ষা কেন নেওয়া হচ্ছে এর ব্যাখ্যা বহুবার দিয়েছি। তারপরেও যখন প্রশ্ন তুললেন কেন পরীক্ষা হবে। আমি অবাক হয়ে গেলাম।
প্রশ্নকারী সদস্যকে আমি জিজ্ঞাস করি, এই পরীক্ষার ফলে ছেলেমেয়েরা কি মনোযোগী হচ্ছে না? কোচিং আলাদা জিনিস। যখন কয়েকটা ছেলে-মেয়ে বেছে নিয়ে পড়ানো হয় সেটাও একটা কোচিং নয়? শিক্ষকরা আলাদা করে পড়াচ্ছেন সেটা কি কোচিং নয়? আমি জানি না কোর্ট কী রায় দেবেন। এখন ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার পক্ষে যদি রায় দেন, এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা পদ্ধতি আমিই চালু করেছি। দায় যদি কিছু হয় সেটা আমার। এতে সমস্যাটা কী হয়েছে? আগে ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য হাতেগোনা কয়েকটি ছেলে-মেয়েদের বাছাই করে তাদের আলাদাভাবে শিক্ষকরা পড়াতেন। শিক্ষকরাই ঠিক করে দিতেন কোন ছেলে-মেয়ে বৃত্তি পরীক্ষা দেবে। অন্য শিক্ষার্থীদের দিকে শিক্ষকরা নজর দিতেন না। যাদের বাদ দেওয়া হলো তাদের মধ্যে কি কেউ মেধাবী নেই? কেন তারা বঞ্চিত হবে?
তিনি বলেন, এসব দিক বিবেচনা করেই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম হাতেগোনা কয়েকজন নয়, ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে সবাই পরীক্ষা দেবে। মেধাবী ও গরিব ছাত্র-ছাত্রীরা বৃত্তি পাবে। পরীক্ষা শেষে তারা একটি সার্টিফিকেট পাবে, এতে এসব ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
শেখ হাসিনা বলেন, আগে ছাত্র-ছাত্রীদের এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সময় তাদের ভয়-ভীতি থাকতো। কিন্তু পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা ব্যবস্থা থাকায় এবং এ দুটি পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট পাওয়ায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের আর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সময় তাদের মধ্যে ভয়-ভীতি থাকে না। এতে করে পরীক্ষার ফল প্রতিবছরই ভালো হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আগের নিয়মে যখন ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষার সময় শিক্ষকরা হাতেগোনা কিছু ছাত্র-ছাত্রীকে বাছাই করে আদালা পড়াশুনা করায়, সেটিও তো এক ধরনের কোচিং। শিক্ষকরা বৃত্তির নামে ১০-১২ জন ছেলে- মেয়েকে পড়াবে কেন? সবাইকে পড়াবে। সেজন্যই এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এই পরীক্ষা পদ্ধতি যুক্তরাজ্যসহ অনেক উন্নত দেশেই রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরাও সেই ধরনের পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করেছি। একজন ছাত্র পঞ্চম ও ৮ম শ্রেণিতে পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট হাতে নেওয়ার পর তাদের মুখের কতো হাসি, কত আনন্দ, এটা কি তাদের চোখে পড়ে না?
বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপালে চলবে ব্যক্তিগত গাড়ি
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
এসএম/এমজেএফ