ওই হত্যা মামলার কোনো আসামি ধরা না পড়ায় চরম আতঙ্কে আছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
গত ১৪ নভেম্বর রাতে রাজধানীর বনানীর ৪ নম্বর রোডের বি-ব্লকের ১১৩ নম্বর বাড়িতে এম এস মুন্সি ওভারসিজ (রিক্রুটিং এজেন্সি) কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক সিদ্দিক হোসেন মুন্সিকে (৫০) গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় বনানী থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলাটি করেন নিহতের স্ত্রী জোসনা বেগম।
পুলিশ বলছে, ‘ঘটনাস্থলের সিসিটিভি’র ফুটেজ পর্যালোচনা করে ওই চার হত্যাকারীকেই শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের নাম, ঠিকানা ও ছবি আমরা পেয়েছি। অবস্থান শনাক্ত করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়া হচ্ছে’।
নিহত সিদ্দিক হোসেন মুন্সি উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় স্ত্রী জোসনা বেগম, দুই মেয়ে সাবরিনা সুলতানা ও সাবিহা সিদ্দিক এবং ছেলে মেহেদী হাসানকে নিয়ে বসবাস করতেন। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায়।
নিহতের ছোট ভাই আব্দুল লতিফ বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ খুনিদের শনাক্ত করেছে। তবে ঘটনার ৯ দিন পার হয়ে গেল, এখনও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এটা খুব উদ্বেগের বিষয়’।
‘আসামি শনাক্তের পরও পুলিশ কেন গ্রেফতার করতে পারছে না- আমরা সেটাই বুঝতে পারছি না’।
‘কারা কি কারণে আমার ভাইকে খুন করলো, সেটি আমাদেরও প্রশ্ন। পুলিশ যদি খুনিদের গ্রেফতার করতে না পারে, তবে আমরাই বা কি করবো? খুবই আতঙ্কের মধ্য দিয়েই আমাদের দিনগুলো কাটছে’- যোগ করেন তিনি।
পুলিশ বলছে, আড়াই মিনিটের কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয় চারজন পেশাদার খুনি। তাদের বাইরেও হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী থাকতে পারে। তবে হত্যার মোটিভ এখনও পুরোপুরি পরিষ্কার হয়নি।
বনানী থানা পুলিশের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থাগুলোও খুনিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ ঘটনার তদন্তে অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। হত্যাকারীদের অবস্থান শনাক্তেও কাজ করছি’।
তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র বলছে, ‘হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিতভাবেই ঘটানো হয়েছে। হত্যার আগে বেশ কয়েকবার ঘটনাস্থলটি আসামিরা রেকি করেছে বলে আমরা ধারণা করছি। এর সঙ্গে অন্য কোনো এজেন্সিও জড়িত থাকতে পারে’।
ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সির বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকেও নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তবে হত্যাকারীরা ধরা পড়লে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীকেও গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলেও সূত্রটির দাবি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
এসজেএ/এএসআর