পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড গুলো নিজ নির্বাচনী এলাকায় তুলে ধরতে সংসদ সদস্যদের নির্দেশ দেন।
বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে সংসদ ভবনের নবম তলায় সরকার দলীয় সভা কক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বৈঠক শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে আলোচনার পুরোটাই ছিল আগামী নির্বাচন কেন্দ্রীক।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, আবদুর রহমান বদি, ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু, ছানোয়ার হোসেন তুহিন, অনুপম শাজাহান জয় প্রমুখ।
সংসদীয় দলের সভা শেষে একাধিক সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
সভায় প্রধানমন্ত্রী এমপিদের উদ্দেশে বলেন, আমরা অনেক উন্নয়ন করেছি, আরও উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে। এ সব উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারের ধারাবাহিকতা দরকার। এ বিষয়গুলো জনগণকে ভালো ভাবে বুঝাতে হবে।
তিনি বলেন, আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রচারে নামতে হবে, নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী, আমরা বিজয়ী হবো।
এমপিদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, যারা স্বচ্ছ, তারাই এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছে। তারাই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবে। এ নিয়ে এতো চিন্তা কিসের, জনপ্রিয়তার ব্যারোমিটারে যারা এগিয়ে আছে তারাই মননোয়ন পাবে। ভালো কাজ করেন মনোনয়ন আপনাকে খুঁজবে।
এ সময় দলীয় এমপিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনার বলেন, প্রতি ৬ মাস পর আমি জরিপ করছি, কার অবস্থা কি সেটা আমি জানি। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। দলের সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। একে অপরের বিরুদ্ধে বিষদগার করা যাবে না, অপপ্রচার চালানো যাবে না। গত দুই মেয়াদে আমরা যে উন্নয়ন করেছি এ যাবত অন্য যারা ক্ষমতায় ছিল তারা সেটা করতে পারেনি। বিএনপি বা জাতীয় পার্টির এদেশে কোনো অর্জন নেই। যা করার আমরাই করেছি। বিএনপি আবার যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে আগুন-সন্ত্রাস করবে, লুটপাট করবে। অতীতে তারা যেটা করেছে সেটাই আবার করবে। এগুলোর মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।
ক্ষমতায় থাকাকালে খালেদা জিয়ার ছেলেরা বিদেশে টাকা পাচার করেছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের মালয়েশিয়ায় পাচার করা টাকা ফেরত আনতে পেরেছি, আরও বিভিন্ন জায়গায় যা পাচার হয়েছে সেগুলো তো আনতে পারি নাই। তারেক রহমান লন্ডনে বসে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে এ টাকা আসে কোথা থেকে। সেই পাচারের টাকা দিয়ে এখন বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে। এগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।
সভায় কয়েকজন এমপি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেছেন, মন্ত্রীরা তাদের এলাকার প্রশাসনকে এমপিদের পক্ষে কাজ না করতে নিষেধ করে দেন। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেছেন আমরা কীভাবে কাজ করবো, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কথা শোনে না। তারা (ইউএনও) বলে মন্ত্রীর নির্দেশ আছে।
বেশকিছু আসনে একাধিক নির্বাচনী প্রার্থী থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে প্রধানমন্ত্রী এমপিদের আত্মবিশ্বাস দিয়ে বলেন, একাধিক প্রার্থী থাকতেই পারে। এতে দোষের কিছু নেই।
সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আগেও ষড়যন্ত্র ছিল, আগামীতেও থাকবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
এসকে/এসএম/আরআইএস/