বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানিপাড়া ইউনিয়নের কোদালদাহ গ্রামে। দিনমজুর বাবা নূর ইসলামের ৩ সন্তানের মধ্যে বড় আইয়ুব।
প্রতিবন্ধী হলেও লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ এতোটাই যে, দিনমজুর বাবা তাকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিতে বাধ্য হন। এখন সে উপজেলার কালুপাড়া গুটিরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পিইসি পরীক্ষার্থী।
বুধবার (২২ নভেম্বর) পরীক্ষা শেষে আইয়ুব আলি বাংলানিউজকে জানায়, ছোটবেলা থেকেই তার লেখাপড়া ভীষণ ভালো লাগতো। আগ্রহ দেখে গরিব বাবা তাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। কিন্তু, কপাল এতোটাই খারাপ যে, দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় দুর্ঘটনায় দুই হাতের বেশিরভাগই কেটে ফেলতে হয়। বাধ্য হয়েই বাবা স্কুল থেকে নাম কাটিয়ে ছাড়িয়ে আনেন। এরপর থেকে বাড়িতে বসেই অবশিষ্ট দু’হাতের বাকি অংশ ও মুখের সাহায্যে লেখার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এক সময় তার চেষ্টা সফল হয়।
আইয়ুব আরও জানায়, লেখাপড়া শিখে বড় হতে চায় সে। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, তা প্রমাণে প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়াতে চায়। এজন্য সবার দোয়াও চায় সে।
কালুপাড়া গুটিরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ বি এম আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার স্কুলেই পিইসি পরীক্ষা দিচ্ছে আইয়ুব। আমি আশ্চর্য হই এটা ভেবে যে, সুস্থ শিক্ষার্থীদের মতোই কষ্ট করে হলেও ভালো পরীক্ষা দিচ্ছে সে’।
বদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহম্মেদ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আইয়ুব আলির অদম্য ইচ্ছাশক্তিই আমাকে অবাক করছে। আমি তার সাফল্য কামনা করি।
বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আগ্রহ ও ইচ্ছাশক্তি যে মানুষকে সামনের দিকে নিয়ে যায়, তার প্রমাণ প্রতিবন্ধী আইয়ুব।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৭
এসআরএস/এএসআর