বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে দশম জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
গুম-খুন নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুম-খুন নানাভাবেই হচ্ছে, আবার যারা নিখোঁজ হচ্ছে তাদের অনেকে আবার ফেরতও আসছে।
‘তবে আমরা যখনই এ ধরনের অভিযোগ পাচ্ছি, তখনই তা খতিয়ে দেখছি। দেশে একজন স্বনামধন্য আঁতেল (ফরহাদ মাজহার) আছেন তিনি নাকি গুম হয়ে গেলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো তিনি খুলনায় নিউ মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ ধরনের ঘটনা তো অহরহই ঘটছে। ’
বক্তব্যে নাম উল্লেখ না করলেও বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের দিকে ইঙ্গিত করে তার মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দেশে আরেকটি দল আছে (বিএনপি), তারা নির্বাচনে আসেনি। এখন রাস্তায় রাস্তায় চিৎকার করে বেড়াচ্ছে। বলছে তারা নাকি সরকারকে টেনেই নামাবেন! আর এটা এমন একজন লোক বললেন, তার (মওদুদ) চরিত্র কী? তা দেশের মানুষ জানে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ বুঝতে পেরেছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয় এবং হবে। মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়, শান্তি চায়, উন্নতি চায়। আর তা যে শুধু আওয়ামী লীগই করতে পারে তাও প্রমাণ করেছি। জাতির জনকের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, তার আকাঙ্ক্ষা আমরা পূরণ করবো।
আরও পড়ুন>>
** বিএনপিকে ভোট দিয়ে মানুষ আপদ ডেকে আনবে না
নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকারীদের প্রতি শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে নির্বাচন (২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি) নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অথচ ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) মতো সারাবিশ্বের জনগণের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। দু’জন সংসদ সদস্যকে সভাপতিও নির্বাচিত করা হয়েছে, যা বিরল ঘটনা।
‘আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি, সেটা বিশ্বের জনপ্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসে দেখে গেছেন। অনেকে বলেন, নির্বাচন অবৈধ। এটা শুনে মনে হয়, যারা এ কথা বলেন, শুধু তাদেরই জ্ঞানের ভাণ্ডার আছে। আর যারা বাংলাদেশকে ভোট দিলেন তাদের কিছু নেই। ’
‘দু’টি সংস্থার সম্মেলনই ঢাকায় অত্যন্ত সফলভাবে হয়েছে। সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি বাংলাদেশে কীভাবে গণতন্ত্রের চর্চা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও তা দেখে গেছেন,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমার স্বীকার করেছে। সমঝোতা সই হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে যৌক্তিক কারণে এ সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে।
চলতি অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সরকার প্রধান বলেন, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন। বর্জ্য রাশিয়া নিয়ে যাবে, এটা নিয়ে দুঃশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। জার্মানিতে শহরের ভেতরেও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। পরিবেশের কোনো ক্ষতি হলে আমরা তা করতাম না।
কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বিরোধিতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে, তারা সবকিছুই বাঁকা চোখে দেখেন, কোনো কিছুই তাদের ভালো লাগে না। তবে এরা কী বললো, তাদের কথা শুনে তো দেশের উন্নয়ন বন্ধ করে দিতে পারি না। দেশের মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে হবে। দেশের ৮০ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ পাচ্ছে। শতভাগ মানুষের বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৭
এসকে/এসএম/এমএ