শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, ব্লাস্ট, গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (জি-স্কপ), সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (টাফ), শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম, গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন, আওয়াজ ফাউন্ডেশন, নারী শ্রমিক কন্ঠ সহ বেশকিছু সংগঠন অংশ নেয়।
নেতৃবৃন্দরা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও মামলার কোন অগ্রগতি নেই। এমনকি নিহতদের ইন্স্যুরেন্সের কথা বলা হলেও তা কার্যকর হয়নি। এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা হচ্ছে না। এমতাবস্থায় সরকারের সুদৃষ্টি প্রত্যাশা করেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে পোশাকখাতের অন্যতম বড় দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। সাভারের আশুলিয়ায় নিশ্চিন্তপুরের মনোসন্তোষপুর এলাকার তোবা গ্রুপের কারখানাটিকে পাঁচ বছর আগে সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। রাতের আঁধারে শ্রমিকরা বেরুতে না পেরে পুড়ে মরে ভিতরেই। সরকারি হিসেবেই আগুনে পুড়ে মরা শ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৯ জনে। আহত হয়েছিলেন আরো দুই শতাধিক। নিহতদের ডিএনএ টেস্ট করে ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
তবে এই অগ্নিকাণ্ড নিছক কোনো দুর্ঘটনা ছিল না বলে জানিয়েছিল বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তদন্ত দল। এছাড়া তদন্ত দল অগ্নিকাণ্ডের সময় গেট তালা বন্ধ রাখার প্রমাণও পেয়েছিল।
অগ্নি দুর্ঘটনায় নিহতদের একটি বড় অংশের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর এলাকায়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও আসা শ্রমিকরা পড়ে মরেছিল সেই দিন।
অভিযোগ ছিল, শ্রমিকদের বের হতে না দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল ওই দিন। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তারসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
তদন্তের পর ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন সিআইডির পরিদর্শক একেএম মহসীনুজ্জামান। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে ‘অপরাধজনক নরহত্যা’ এবং ‘অবহেলার কারণে মৃত্যু’র অভিযোগ আনা হয়।
২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ঢাকার জজ আদালতে এ মামলার বিচার শুরু হয়।
দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের দুই বছর আগে বিচার শুরু হলেও ১৯ দিনে মাত্র চারজন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করতে পেরেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচারের দাবি তুলেছে শ্রমিক সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৭
এএম/আরআই