ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭’ অনুস্বাক্ষরের দাবি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭
‘জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭’ অনুস্বাক্ষরের দাবি ‘জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭’ অনুস্বাক্ষরের দাবিতে মানববন্ধন

ঢাকা: ‘জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭’ অনুস্বাক্ষর এবং তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর স্বাভাবিক প্রবাহের বাধা অপসারণে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন বাস্তবায়ন আন্দোলন।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ১৮টি সংগঠন এই কর্মসূচি পালন করে।    

জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন বাস্তবায়ন আন্দোলনের আহ্বায়ক ও হাওরঅঞ্চলবাসীর প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুমের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন জলপরিবেশ ইনস্টিটিউটের মহাসচিব এবং হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বার্ডের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, হাওরঅঞ্চলবাসীর সমন্বয়ক ড. হালিম দাদ খান, সমন্বয়ক জাকিয়া শিশির, সাইফুল ইসলাম, নোঙরের প্রধান নির্বাহী সুমন শামস, কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (বাপা) নাজিম উদ্দিন, বুড়িগঙ্গা রিভার কিপারের সোহাগ মহাজন, ওয়াটার কমন্সের শমসের আলী, হাওরের পাশে বাংলাদেশের সাদিয়া জেরিন পিয়া প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের উজানের দেশগুলো বঙ্গোপসাগরে পতিত আন্তর্জাতিক নদীগুলোর পানিপ্রবাহ থেকে পানি প্রত্যাহার করে, এমনকি ভিন্ন অববাহিকার খরা-অঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে পানির অভাবে বাংলাদেশের নদীগুলো মরে যাচ্ছে। দেশবাসীর জীবনযাপন, চাষবাস, প্রকৃতি, পরিবেশ, জলজজীব, প্রাণবৈচিত্র্যসহ সামগ্রিক পরিবেশ মারাত্মক সংকটে পড়ছে। অথচ ‘জাতিসংঘ পানি প্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭’ অনুস্বাক্ষর না করায় বাংলাদেশ সমুদ্র বিজয়ের মতো কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে পারছে না।

এ পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশকে অবিলম্বে ‘জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭’ অনুস্বাক্ষর করার জোর দাবি জানান বক্তারা।

এছাড়া বক্তারা প্রতিবেশী দেশগুলোকে ‘জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭’ অনুস্বাক্ষরে উৎসাহিত করা, উজানে আন্তর্জাতিক নদীগুলোর পানি প্রত্যাহারের কারণে বাংলাদেশের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, তিস্তাসহ সকল আর্ন্তজাতিক নদীর পানি ন্যায্যতার সঙ্গে ব্যবহারের চুক্তি স্বাক্ষর করা এবং ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প বাতিল করার জোর দাবি জানান।

দাবি আদায়ে আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সমাবেশ করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানান জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন বাস্তবায়ন আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম।

আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহের উপর উজানের দেশের একচেটিয়া কর্তৃত্ব ও ভাটির দেশের ক্ষতি হয় এমন ব্যবহার রোধ করার জন্য ১৯৯৭ সালে
বাংলাদেশসহ ১০৬টি দেশের সম্মতিতে ‘জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন’ গৃহীত হয়। চীন এ কনভেনশনের বিরোধিতা করে এবং ভারত ও পাকিস্তান ভোট প্রদানে বিরত থাকে। শর্ত অনুযায়ী ৩৫তম দেশ হিসেবে ভিয়েতনাম অনুস্বাক্ষর করায় কনভেনশনটি ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত হয়। কিন্তু ভাটির দেশ হওয়া সত্ত্বেও অদৃশ্য কারণে বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত কনভেনশনটি অনুস্বাক্ষর করেনি।

ওয়াটার কমন্স ফোরাম, ওয়াটার কিপার বাংলাদেশ, গ্রীনভয়েস, জল-পরিবেশ ইনস্টিটিউট, তিস্তা রক্ষা আন্দোলন, তুরাগ বাঁচাও আন্দোলন, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন-রাজশাহী, নোঙ্গর, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী ফোরাম, বিজ্ঞান চেতনা পরিষদ-রংপুর, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন, রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি, রিভারাইন পিপল, সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ, হাওরঅঞ্চলবাসীর পক্ষে অংশগ্রহণকারীরা জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন বাস্তবায়ন আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।