ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মোবাইল কোম্পানিগুলোর ভ্যাট ফাঁকি ৮৮৩ কোটি টাকা

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৭
মোবাইল কোম্পানিগুলোর ভ্যাট ফাঁকি ৮৮৩ কোটি টাকা ৮৮৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল

ঢাকা: রিপ্লেসমেন্ট সিম ইস্যুর নামে নতুন সিমকার্ড বিক্রির মাধ্যমে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল সরকারের ৮৮৩ কোটি ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৭৩০ টাকা ৩২ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিই‌উ) ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে ফাঁকি দেওয়া ওই অর্থ আদায়ে সম্প্রতি চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করেছে কোম্পানিগুলোর প্রতি। 

বৃহৎ করদাতা ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, ওই সময়ে নতুন গ্রাহকদের কাছে ৭৫ লাখ ২৫ হাজার ৭৬৩টি নতুন সিম বিক্রি করেছে রবি আজিয়াটা। যেখানে সম্পূরক শুল্ক বাবদ ১৮০ কোটি ৬৭ লাখ ৫৪ হাজার ১৮৫ টাকা ১০ পয়সা এবং মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বাবদ ১০৪ কোটি ৫৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩৪৯ টাকা ৯৫ পয়সা পাবে এলটিই‌উ।

কোম্পানিটি সব মিলিয়ে ২৮৫ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার ৫৩৫ টাকা ০৭ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।  
 
গ্রামীণফোন একই সময়ে সিম বিক্রি করেছে ১ কোটি ৬ লাখ ৩ হাজার ৩৫৮টি। যেখানে সম্পূরক শুল্ক বাবদ ২৪০ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ১৯৪ টাকা ও মূসক বাবদ ১৩৮ কোটি ৮৯ লাখ ২৫ হাজার ৬২৬ টাকা পাওনা বকেয়া রয়ে গেছে। দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটরটি এভাবে সরকারের মোট ৩৭৮ কোটি ৯৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮২০ টাকা ২২ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।  
 
৪৫ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৭টি সিম বিক্রির বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক বাবদ ১০৭ কোটি ৪৯ হাজার ১৭৩ টাকা ৪৯ পয়সা ও মূসক বাবদ ৬১ কোটি ৯০ লাখ ৯৯ হাজার ৮৭৮ টাকা ৯৫ পয়সা পাওনা রয়েছে বাংলালিংকের কাছে। মোট ১৬৮ কোটি ৯১ লাখ ৪৯ হাজার ৫২ টাকা ৪৪ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে কোম্পানিটি।  
 
অন্যদিকে এয়ারটেল (বর্তমানে রবি আজিয়াটার সঙ্গে একীভূত) ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৫৮৬টি সিম বিক্রি করে সম্পূরক শুল্ক বাবদ ৩১ কোটি ৮৪ লাখ ৫১ হাজার ৪২৬ টাকা ৮ পয়সা ও মূসক বাবদ ১৮ কোটি ৪২ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯৬ টাকা ৫২ পয়সার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মোট ফাঁকির পরিমাণ ৫০ কোটি ২৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩২২ টাকা ৫৯ পয়সা।  
 
এলটিইউ’র কমিশনার মো. মতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বকেয়া ভ্যাট আদায়ে এনবিআর ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর এলটিইউ’র (ভ্যাট) কমিশনারকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত কমিশনারকে আহ্বায়ক করে চার মোবাইল অপারেটর, অ্যামটব ও বিটিআরসি’র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ৫ সদস্যের কমিটি পুনর্গঠিত হয়। এ কমিটি মোবাইল অপারেটরগুলোর দাখিলপত্র যাচাই করে। সিম রিপ্লেসপেমেন্টের কর বিষয়ে এনবিআরের নির্দেশনা, ব্যাখ্যা ও বিটিআরসি’র গাইডলাইন অনুসারে এ খাত থেকে রাজস্ব আহরণে আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকায় চারটি মোবাইল অপারেটরকেই চিঠি দেয় এলটিইউ।  

তিনি আরও বলেন, চিঠিতে সিম রিপ্লেসমেন্টের তথ্য যাচাইয়ে চারটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চায় এলটিইউ। কিন্তু তারা কোনো ধরনের তথ্য দিয়ে এনবিআরকে সহযোগিতা না করায় ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি নিশ্চিত হয়। সবাই নিয়মিত ভ্যাট পরিশোধ করলেও মোবাইল কোম্পানিগুলো সব সময় টালবাহান‍া করে আসছে।  

চারটি মোবাইল অপারেটরের ভ্যাট ফাঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি নন বলে বাংলানিউজকে জানান কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭
এসজে/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।