ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিই রোগাক্রান্ত!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৭
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিই রোগাক্রান্ত! ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, এক্স-রে মেশিন ও জেনারেটর নষ্ট, ইসিজি মেশিন ব্যবহারের জন্য অভিজ্ঞ লোকের অভাব। এছাড়া চিকিৎসকরা সরকারি হাসপাতালের চেয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে সময় দেওয়ার ফলে বরুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির এখন বেহাল দশা।

সাধারণ রোগীরা মানসম্মত চিকিৎসা পাচ্ছে না। সর্বোপরি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নিজেই রোগাক্রান্ত।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র বরুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা বিশিষ্ট। এখানে প্রতিদিন আউটডোরে রোগির সংখ্যা প্রায় ৩ শত এবং ভর্তি হয়ে থাকে প্রায় ৩৪ জন।  

গত ৫/৬ মাস যাবত হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন ও জেনারেটর নষ্ট হয়ে আছে। ইসিজি মেশিন ব্যবহারের জন্য অভিজ্ঞ লোক নেই। গরীব-অসহায় রোগিরাই সরকারি হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা নিতে।  

এক্সরে মেশিন নষ্ট হওয়ায় এবং ইসিজি মেশিনটি ব্যবহারের জন্য অভিজ্ঞ লোক না থাকায় এখানে এসে একই সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে রোগীদের তাদেরকে বলা হয় হাসপাতালে এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট, বেসরকারি হাসপাতালে চলে যান।

বর্হিবিভাগের রোগী কামাল মিয়া(৪৯), হাদু মিয়া, হোসনেয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ডাক্তাররা সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বেশি সময় দেয় প্রাইভেট হাসপাতালে। অনেক সময় ইমার্জেন্সিতে রোগিরা ডাক্তার পান না। ব্রাদাররা অনেক সময় রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করে।

এছাড়া ভর্তি হওয়া রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, তাদের নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করছে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে খাবার সরবরাহকারি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আবির ট্রেডার্সের কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল, দুপর ও রাত এ তিন বেলা খাবের জন্য সরকার আমাদের জন প্রতির জন্য ১২৫ টাকা করে দিচ্ছে। এ টাকা থেকে সরকারকে ১০ পার্সেন্ট ভ্যাট দেওয়াসহ পরিবেশনের লোকজনের বেতন দিয়ে আমাদের পোষায় না। খাবারের মান উন্নয়ন করতে হলে জন প্রতি টাকা বাড়াতে হবে বলে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ জানায়।

এদিকে রোগীদের জন্য ব্যবহৃত বেড সীটগুলো ময়লাযুক্ত। ধোপার লোক হাসপাতালে সব সময় আসে না। ফলে ময়লাযুক্ত বেড সীট রোগীদের ব্যবহার করতে হয়। সিনিয়র কর্মকর্তাদের অভিযোগ ধোপার লোক তাদের কথা শুনছে না।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, হাসপাতালে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে বৃদ্ধি করে ৫০ শয্যায় করলে অনেক উপকৃত হত শয্যা বাড়ার সাথে সাথে অন্য সব কিছুই বাড়বে। তাছাড়া জেনারেটর নষ্ট হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এখানে আইপিএস ও সোলারের ব্যবস্থা হলে বিদ্যুতের ভোগান্তি অনেকটা কমে যেতো।

এ হাসপাতালে কোন প্রহরী নেই। প্রহরী না থাকায় হাসপাতালটি সারা বছর অরক্ষিত থাকে। এতে মাদক সেবনকারীদের উৎপাত ও বহিরাগতদের অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ে রোগী ও তাদের আস্মীয়-স্বজনদের চলাচলে সমস্যায় পড়তে হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, খাবার নিম্নমানের বিষয়টি জেনেছি।  এক্স-রে ও জেনারেটরটি বিকল হয়ে রয়েছে। ইসিজি মেশিন ব্যবহারের জন্য একজন অভিজ্ঞ লোকসহ সকল সমস্যার বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। ইতিমধ্যে ৩১ শয্যা থেকে হসপিটালটি ৫০ শয্যার অনুমোদন হয়েছে। অচিরেই ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, ২৭ নভেম্বর, ২০১৭
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।