ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হোমনা থেকে অপহৃত শিশু চার দিনেও উদ্ধার হয়নি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
হোমনা থেকে অপহৃত শিশু চার দিনেও উদ্ধার হয়নি

কুমিল্লা: কুমিল্লার হোমনায় অপহৃত শিশু মো. রিয়াদ (১৩) চার দিনেও উদ্ধার হয়নি। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করে আদালতে সোর্পদ করেছে পুলিশ।

অপহৃত রিয়াদ উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের মিরাশ গ্রামের মো. সিরাজ মিয়ার ছেলে ও নিলখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রিয়াদ দরিদ্র ও সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান।

দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে রিয়াদ সবার ছোট। তার বাবার একার পক্ষে সংসার চালিয়ে তাদের পড়ালেখার খরচ চালানো সম্ভব হতো না, বিধায় নিজের পড়ালেখার খরচ জোগানো ও বাবার ওপর সংসারের অতিরিক্ত চাপ কমাতে স্কুল শেষে ভাড়ায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালাতো রিয়াদ।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার পঞ্চবটি এলাকা থেকে যাত্রীবেশি কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

এ ঘটনায় রিয়াদের মামা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে হোমনা থানায় একটি অপহরণ মামলা করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে পুলিশ ওই দিন রাতে  ইজিবাইকসহ মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানিঞ্জের উত্তর ত্রিশ এলাকা থেকে আটক করে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) পুলিশ আটক হওয়া তিনজনকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তারের আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ ও রিয়াদের মামা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানায়, অপহরণের দিন শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে রিয়াদের মোবাইল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ইজিবাইকসহ তাকে ফিরে পেতে চাইলে ইজিবাইকের মালিক মো. বাবুল মিয়ার মোবাইলে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার দাবি করেন। কথামত রাতেই পরিবারের সদস্যরা মুরাদনগর থানাকে বিষয়টি অবহিত করেন। ফোনে দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী ত্রিশ এলাকায় মুক্তিপণের জন্য অপেক্ষারত তিন যুবককে ইজিবাইকসহ আটক করে মুরাদনগর থানা পুলিশ। পরে আটক হওয়া তিনজনকে হোমনা থানায় সোপর্দ করা হয়।

আটক হওয়া যুবকরা হলেন- দেবিদ্বার উপজেলার শিবনগর বক্স বেপারি বাড়ি গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের ইউনুছ মিয়ার ছেলে মো. হেলাল (২৩) এবং একই গ্রামের বারিক মিয়ার ছেলে খাবির হোসেন (২৮)।

হোমনা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) নাজমুল হক বাংলানিউজকে বলেন, মোবাইলে মো. রিয়াদকে অপহরণের অভিযোগে মুক্তিপণ দাবির সূত্র ধরে মুরাদনগর থানা পুলিশ ওই তিনজনকে আটক করে হোমনা থানায় সোপর্দ করে। গ্রেফতারদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ‘ক্লু’ পাওয়া গেলেও রিয়াদকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এরআগে গত ৪ নভেম্বর উপজেলার দুলালপুর হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র মো. জাহিদকে অহরণের পর খুন করে মুক্তিপণ দাবি করে। গুম করার উদ্দেশ্যে জাহিদের মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। পরে ঘাতকদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জাহিদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

বর্তমানে অপহৃত স্কুল ছাত্র রিয়াদ বেঁচে আছে না-কি তাকেও খুন করা হয়েছে এ নিয়ে রিয়াদের পরিবার, তার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ উপজেলার সর্বত্র উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।