মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে সুমন আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করেছে। সুমন ঝালকাঠির নলছিটির কুশংগাল এলাকার মনির হোসেনের ছেলে।
গ্রেফতারকৃত সুমন স্বীকারোক্তিতে জানায়, ফতুল্লার পিলকুনী গ্রামের জনি (১৮), হৃদয় (১৮) সহ অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ২২ জন সহযোগী বেশ কিছুদিন ধরেই ফেসবুকে বিভিন্ন মেয়ের নামে ভুয়া আইডি খুলে লোকজনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এবং পরবর্তীতে সেই মেয়ের সাথে দেখা করার কথা বলে ব্ল্যাকমেইল করে তাদের সর্বস্ব লুটে নেয়। এ ছাড়াও তাদের জিম্মি করে তাদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকাও দাবি করে তারা।
এরই প্রেক্ষিতে জনি ''Sintiya Jahan Tora(NT)'' নামে ফেসবুকে একটি ভুয়া আইডি খুলে। ওই আইডিতে নাঈমকে ফেসবুকে যুক্ত করে যোগাযোগ শুরু করে। জনি ওই ভুয়া আইডির মাধ্যমে নাঈমের সাথে দীর্ঘদিন চ্যাটিং (যোগাযোগ) করে আসছিলো।
চলতি মাসের ১৬ তারিখে জনি, তুরাব ও হৃদয় নামে তিনজন আসামি সুমন ওরফে রাফার (১৮) কাছে আবু নাঈমকে ব্ল্যাকমেইল করে মোবাইল ও টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানায়। প্রস্তাবে রাজি হয় সুমন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯ তারিখ বিকেলে জনি, আবু নাঈমকে নন্দলালপুরস্থ কাকলি ডাইংয়ের পাশে ডেকে আনার জন্য তার সহযোগী হৃদয়কে পাঠায়। এ সময় সুমন তার ২০ থেকে ২২ জন সহযোগী নন্দলালপুরস্থ কাকলী ডাইংয়ের গলির ভিতর অবস্থান করতে থাকে।
সন্ধ্যায় নাঈম গলিতে আসামাত্র আসামি ও তার সহযোগীরা নাঈমকে ধরে কিলঘুষি ও লাথি মারে। এক পর্যায়ে নাঈম মাটিতে পড়ে গেলে তাদের সহযোগী সিফাত তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে নাঈমের বুক এবং পিঠে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় নাঈম। পরে তার মোবাইল ছিনতাই করে পালিয়ে যায় আসামিরা।
রোববার (১৯ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে আবু নাঈমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দেশের বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালসহ ফেসবুকে নিহতের ছবি দেখে স্বজনরা ফতুল্লা থানায় গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
নিহত আবু নাঈম মুন্সিগঞ্জের চরডুমিয়ার ব্যবসায়ী মনসুর আহম্মেদের ছেলে। সে ফতুল্লার পিলকুনি জোড়া মসজিদ এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতো।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামালউদ্দিন জানান, ভিকটিমের পিতার অভিযোগের ও মামলার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। আসামি নিজেই হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে।
তিনি জানান, আসামির দেওয়া তথ্য মোতাবেক মামলার আলামত মোবাইল, চাকু উদ্ধার সহ অন্যান্য সহযোগী আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
আরআই