গাজীপুরের বিভিন্ন হাট-বাজারের সবজি ও মুদি দোকানিরা সস্তায় পলিথিন ব্যাগ কিনে থাকে। কিছু কিনলে তার সাথে বিনামূল্যে পলিথিন ব্যাগ দেওয়া হয়।
অন্যদিকে হাট-বাজারে পলিথিনের বিকল্প ব্যাগ তেমন পাওয়াও যায় না। যেগুলোই বা পাওয়া যায় সেগুলোর প্রতিটির দাম ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতা দুজনেরই বিকল্প ব্যাগের প্রতি আগ্রহ কম।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জয়দেবপুর বাজার, চান্দানা চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাস, কড্ডা হাট, কোনাবাড়ী বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে সবজি ও মুদিসহ প্রায় সব ধরনের দোকানে অহরহ পলিথিন ব্যাগ দেখা যায়। সবজিসহ কোনো কিছু কিনলেই বিক্রেতারা পণ্যটি ভরে দিচ্ছে পলিথিন ব্যাগে। বাসায় নেওয়ার পর ব্যবহার শেষে ওইসব পলিথিন ব্যাগ ফেলে দেওয়া হচ্ছে উন্মুক্ত স্থানে, যত্রতত্র। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। ড্রেন-নর্দমা বন্ধ হয়ে অকেজো হয়ে যাচ্ছে। আইন করে পরিবেশ দূষণকারী পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করার পর বেশ কিছুদিন এর ব্যবহার বন্ধ ছিল। ওই সময় হাট-বাজারে এতো বেশি পলিথিন দেখা যেত না। বর্তমানে গাজীপুরের প্রায় সব হাট-বাজারে পলিথিন ব্যাগের ছড়াছড়ি মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
কোনাবাড়ী বাজারে পলিথিন ব্যাগের ব্যবসায়ী মো. সিরাজ সব জেনেশুনেই এই নিষিদ্ধ পণ্যটির ব্যবসা করছেন চুটিয়ে। তিনি সব স্বীকার করে নিয়েই বাংলানিউজকে বলেন, পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ তা জানি। তবে এর চাহিদাও অনেক বেশি। আর যার চাহিদা বেশি সে ব্যবসাই করবে মানুষ। গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস বাজার থেকে অল্প দরে কিনে এখানে তা বিক্রি করে থাকি। কোনাবাড়ী কাঁচাবাজারে প্রায় ১৪টি পলিথিনের দোকান আছে। আগে পলিথিনের কারখানা বন্ধ করা হোক, তাহলে আমরাও পলিথিন ব্যাগ বেচা বন্ধ করে দেব। সরকার তো পলিথিন ব্যাগের কারখানার বন্ধ করে না! কেন করে না?
কোনাবাড়ী বাজারে ভাই ভাই ভ্যারাইটিজের পলিথিন ব্যাগ ব্যাবসায়ী মো. শাহীন জানান, নিষিদ্ধ এ পলিথিন বিক্রি করি ১৯৯৮ সাল থেকে। বর্তমানে কোনাবাড়ী ওসি মার্কেটে একটি পলিথিনের দোকান রয়েছে। পলিথিন নিষিদ্ধ থাকলেও কেউ কিছু বলে না। তাই বিক্রি করি। যখন প্রশাসন আসে তখন বেচা বন্ধ করে দেই।
সবজিবিক্রেতা জসিম উদ্দিন জানান, পলিথিন ব্যাগের দাম কম এবং সহজেই পাওয়া যায়। যার কারণে কিছু কিনলে ক্রেতাদের তা পলিথিন ব্যাগেই দেওয়া হয়। অন্য ব্যাগ বাজারে থাকলেও এর দাম বেশি এবং তা খুব বেশি সংখ্যায় পাওয়া যায় না।
এব্যাপারে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সালাম সরকার বাংলানিউজকে জানান, নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হাট বাজারে পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। গত কয়েক দিন আগেও গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস কাঁচাবাজারে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩ টন পলিথিন জব্দ করা হয়। এছাড়া ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পলিথিন ব্যাগ বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
আরএস/জেএম