অপহৃত রিয়াদ উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের মিরাশ গ্রামের মো. সিরাজ মিয়ার ছেলে ও নিলখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলো।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রসুল আহমদ নিজামী বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রসুল আহমদ নিজামী বলেন, গ্রেফতার তিন যুককের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার বিকেলে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রামের একটি রাস্তার পাশের গর্ত থেকে রিয়াদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অপহরণের পর ওইদিন সন্ধ্যায়ই রিয়াদকে খুন করে ইজিবাইক নিয়ে মুরাদনগর উত্তর ত্রিশ গিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে গ্রেফতাররা-জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এরআগে, শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার পঞ্চবটি এলাকা থেকে যাত্রীবেশি কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি রিয়াদকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তার পরিবার।
এ ঘটনায় রিয়াদের মামা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে হোমনা থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। পরে জড়িত তিন যুবককে ওইদিন রাতেই ইজিবাইকসহ মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানিঞ্জের উত্তর ত্রিশ এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। পর দিন মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) আটক হওয়া তিনজনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তারের আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ ও রিয়াদের মামা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানায়, অপহরণের দিন শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে রিয়াদের মোবাইল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ইজিবাইকসহ তাকে ফিরে পেতে চাইলে ইজিবাইকের মালিক মো. বাবুল মিয়ার মোবাইলে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার দাবি করেন। কথামত রাতেই পরিবারের সদস্যরা মুরাদনগর থানাকে বিষয়টি অবহিত করেন। ফোনে দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী ত্রিশ এলাকায় মুক্তিপণের জন্য অপেক্ষারত তিন যুবককে ইজিবাইকসহ আটক করে মুরাদনগর থানা পুলিশ।
তারা হলেন- দেবিদ্বার উপজেলার শিবনগর বক্স বেপারী বাড়ি গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (২৮) মুরাদনগর উপজেলার উত্তর তিরিশ গ্রামের ইউনুছ মিয়ার ছেলে মো. হেলাল (২৩), একই গ্রামের বারিক মিয়ার ছেলে খাবির হোসেন (২৮) এবং উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর। পরে আটক হওয়া তিনজনকে হোমনা থানায় সোপর্দ করা হয়।
রিয়াদের মামা জাহাঙ্গীর আলম জানান, রিয়াদ এক দরিদ্র ও সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে রিয়াদ সবার ছোট। তার বাবার একার পক্ষে সংসার চালিয়ে তাদের পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হতো। তাই নিজের পড়ালেখার খরচ জোগানো ও বাবার ওপর সংসারের অতিরিক্ত চাপ কমাতে গিয়ে স্কুল শেষে ভাড়ায় ব্যটারিচালিত ইজি বাইক চালাতো রিয়াদ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
ওএইচ/