ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গৌরব আর বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৭
গৌরব আর বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

ঢাকা: আজ ০১ ডিসেম্বর, শুক্রবার। বাঙালির গৌরব ও বিজয়ের মাস শুরু। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ডিসেম্বরেই অর্জিত হয় লাল সবুজের পতাকা, স্বাধীন বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এ স্বাধীনতা, এ বাংলাদেশ।

তাই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে ডিসেম্বর মাস উদযাপন করে বাঙালি।
 
আট মাস যুদ্ধের পর নভেম্বরের শেষ থেকেই ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধে।

৩ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনী তথা ভারতের সশস্ত্র বাহিনী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে আক্রমণ শুরু করে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে।

একে একে সীমান্তবর্তী সব পাকিস্তানের দখলে থাকা বর্ডার অবজারবেশন পোস্টগুলো (বিওপি) দখলে আসতে শুরু করে। পিছু হটে ঢাকার দিকে চাপতে থাকে হানাদাররা। মূলত ৯ ডিসেম্বরের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়ে তারা।

অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান তথা তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে পাক বাহিনী আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। ওইদিন বিকেলে পরাজয়ের দলিলে সই করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী (এ কে খান নিয়াজী)।
 
একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন।

ওই সময় তার সেই ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতা সংগ্রাম’ শুনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি।

বাঙালির যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই শত্রুর মোকাবেলা করার নির্দেশনা দেন তিনি। আপামর জনতা তার ডাকে সাড়া দিয়ে তখন থেকেই যুদ্ধের প্রস্ততি নিতে থাকে। বিশেষ করে ছাত্র-জনতা নিজ নিজ এলাকায় সাধারণ মানুষকে বাঁশের লাঠি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেন।
 
২৫শে মার্চ রাতেই বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর পাকিস্তানি বাহিনী শুরু করে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’। নিরীহ ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর চালানো হয় নির্যাতন-নিপীড়নের স্টিম রোলার।

প্রথমেই পাকবাহিনী আক্রমণ করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে। অবশ্য দেশপ্রেমী পুলিশ সদস্যরা প্রতিরোধও গড়ে তুলেন।

এ খবর দেশব্যাপী দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লে বিওপিগুলোতে থাকা ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের বাঙালি জোয়ানরা স্থানীয়দের সঙ্গে মিলে দখলে নিয়ে নেয় সীমান্ত।

ঢাকা থেকে পাকহানাদাররাও ছুটতে থাকে সীমান্তের দিকে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এ দেশীয় রাজাকার, আল-বদর, আল শামস। এদের সহায়তায় নির্মম হত্যাকাণ্ড, অগ্নিকাণ্ড, নির্যাতন আর ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়।

বাঙালি ইপিআর আর মুক্তিযোদ্ধারা বিওপি ছেড়ে চলে যান ভারতে। সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রথমে তারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর অধীনে গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর সেক্টর গঠনের পর বাঙালি সেনা অফিসারদের অধীনে যুদ্ধ করেন তারা।
 
স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় সময় পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযু্দ্ধের সময় সংঘঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচার কাজ শুরু করে। ইতোমধ্যে শীর্ষ অপরাধীদের অনেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
 
বিজয়ের মাসটি সর্বস্তরের মানুষ নানা আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপন করে। অন্যবারের মতো এবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এরই মধ্যে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৭
ইইউডি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।