ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রয়োজনেই জ্বলবে বাতি, থাকবে না চৌরাস্তায় জটলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৭
প্রয়োজনেই জ্বলবে বাতি, থাকবে না চৌরাস্তায় জটলা ‘সেফ রোড সেভ লাইফ’ প্রকল্পের নকশা। ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: প্রয়োজন হলেই সড়কে জ্বলে উঠবে বাতি, নতুবা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিভে যাবে সে বাতি। ট্যাংক ভরে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে মোটর। আর দেশের চৌরাস্তাগুলোতেও থাকবে না কোনো জটলা। 

উদ্ভাবনী প্রদর্শনীতে এমন সব প্রকল্প উপস্থাপন করে সবার নজর কাড়লেন ‘বসুন্ধরা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট ঢাকা’র একদল শিক্ষার্থী। বিদ্যুৎ ও পানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি নগরবাসীকে জটলার হাত থেকে পরিত্রাণ দেওয়ার স্বপ্নে এসব প্রকল্প উদ্ভাবন করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।


 
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের লক্ষ্যে ‘আঞ্চলিক দক্ষতা প্রতিযোগিতা’ শীর্ষক এ প্রদর্শনীর আয়োজন হয়। এতে ১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। ‘ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর উইথ অ্যালার্ম অ্যান্ড সেন্সর সিস্টেম’ প্রকল্প দেখতে আগ্রহীদের ভিড়।  ছবি: সুমন শেখবসুন্ধরা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত বিদ্যুৎ ও পানি সাশ্রয়ী প্রকল্পটি ‘ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর উইথ অ্যালার্ম অ্যান্ড সেন্সর সিস্টেম’। আর জটলা সরানোর প্রকল্পটি হলো ‘সেফ রোড সেভ লাইফ’। তাদের আরেকটি প্রকল্প হলো ‘হাইড্রোলিক ক্রেন’।  

প্রতিষ্ঠানটির ইলেকট্রিকাল, মেকানিক্যাল ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা দেশের ‘মানুষের কল্যাণে’ এই তিনটি উদ্ভাবন করেছেন। তাদের প্রকল্পগুলো দেখতে জটলা বাঁধে বসুন্ধরা টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে’র স্টলে।  

স্টলে থাকা শিক্ষার্থীরা আগ্রহীদের জানাচ্ছিলেন, ‘ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর উইথ অ্যালার্ম অ্যান্ড সেন্সর সিস্টেম’ মূলত পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য। এই সেন্সর সিস্টেমে শুধু প্রয়োজনেই বাতি জ্বলবে এবং পানির মোটর চলবে।  ‘হাইড্রোলিক ক্রেন’ প্রকল্প।  ছবি: সুমন শেখবাতির ক্ষেত্রে সেন্সরটি সূর্যের আলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত। সেন্সরের সঙ্গে সম্পৃক্ত সূর্যের আলো। অর্থাৎ সূর্য উঠলেই নিভে যাবে বাতি। আর সূর্য ডুবে গেলে ছড়াবে আলো। একইভাবে পানির ট্যাংকি ভরে গেলেই মোটর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। ট্যাংকি খালি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটর চলা শুরু করবে। এই সেন্সরের দাম মাত্র ২০০ টাকা। এই সেন্সর সিস্টেম উদ্ভাবন করেছেন প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।  
 
আগ্রহীদের প্রশ্নের জবাবে ‘সেফ রোড সেভ লাইফ’ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলছিলেন, শহরবাসীর অন্যতম সমস্যা যানজট। জটলা থেকে নগরবাসীকে পরিত্রাণ দিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা উদ্ভাবন করেছেন ‘সেফ রোড সেভ লাইফ’ প্রকল্পটি। এই উদ্ভাবনের অন্যতম উদ্দেশ্য চৌরাস্তার জটলা নিরসন। প্রকল্পের নকশায় ইউলুপের মতো নির্মাণ শৈলী ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কয়েক স্তর বিশিষ্ট ইউলুপ এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, কোনো জটলা ছাড়াই যানবাহন চলতে পারবে। গাজীপুর চৌরাস্তাকে মাথায় রেখে নকশাটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

যেমন- প্রথম স্তরে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল রোড সোজাসুজি রাখা হয়েছে। আর এই চারটি স্থান থেকে  সোজা না গিয়ে ডানে বা বামের কোনো গন্তব্যে যাওয়ার জন্য লেন রেখে তৈরি করা হয়েছে উড়াল সেতু। এই উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবে প্রয়োগ করলে শুধু গাজীপুর চৌরাস্তা নয়, ঢাকা, চট্টগ্রাম বা অন্য কোনো নগরীর যে কোনো চৌরাস্তায় জটলা থাকবে না বলে আশা করছেন উদ্ভাবক শিক্ষার্থীরা।
 
স্টলে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা উদ্ভাবন করেছেন ‘হাইড্রোলিক ক্রেন’ প্রকল্পটি। ছোট এই ক্রেনের মাধ্যমেই প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে, কিভাবে বড় ক্রেন পরিচালনা করা যায়। ফলে ১০-১২ লাখ টাকা দিয়ে ক্রেন কিনে প্রশিক্ষণ নিতে হবে না। মাত্র ৮০০ টাকায়ই প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে শিক্ষার্থীদের।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৭
এমআইএস/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।