শনিবার (০২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০০২ ফ্লাইটযোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ পৌঁছানোর পর সরাসরি মেয়রের বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের ৮০ নম্বর বাসায় নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাকিল মেরাজ জানান, মরদেহ বহনকারী বিমানে ঢাকায় এসেছেন আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক, ছেলে নাভিদুল হক ও নাতনি।
মেয়রের মরদেহ বিমান থেকে নামিয়ে মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটে আনা হয়।
সেখানে মেয়রের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সরকারি দলের নেতাকর্মীরা।
এরপর বনানীর বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয় মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স।
বিকেল ৩টায় আর্মি স্টেডিয়ামে আনিসুল হককে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন সাধারণ মানুষসহ সর্বস্তরের বিশিষ্ট নাগরিকেরা।
শ্রদ্ধা অর্পণ শেষে সেখানেই বাদ আসর নামাজে জানাজার পর বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে জনপ্রিয় এই ব্যক্তিত্বকে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন আনিসুল হক। হাসপাতালে তিনি কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস (ভেন্টিলেশন) যন্ত্র দেওয়া অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্র খুলে নিয়ে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) বাদ জুমা লন্ডনের রিজেন্ট পার্ক মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
আনিসুল হক দীর্ঘ দুই মাস ধরে মস্তিকের রক্তনালীতে প্রদাহজনিত রোগে ভুগছিলেন।
গত ২৯ জুলাই ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান তিনি। গত ১৩ আগস্ট লন্ডনের ন্যাশনাল নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে হাসপাতালে চেকআপ করাতে যান। চেকআপ শেষে বাসায় ফিরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ডাক্তারি ভাষায় একে ‘মাইল্ড ব্রেইন স্ট্রোক’ বলা হয়।
পরে তাকে হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মস্তিস্কের প্রদাহজনিত রোগ ‘সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিস’ শনাক্ত করেন চিকিৎসকেরা।
এরপর থেকে মেয়র আনিসুলকে ওয়েলিংটন হাসপাতালের হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি ঘটলে তাকে গত ৩১ অক্টোবর আইসিইউ থেকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।
গত রোববার (২৬ নভেম্বর) শরীরে নতুন করে ইনফেকশন দেখা দেওয়ার পর মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থেকে ফের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
শারীরিক অবস্থার আরও কিছুটা অবনতি হলে পরে আনিসুল হককে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
৬৫ বছর বয়সী আনিসুল হক বাংলাদেশ টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পান। তৈরি পোশাকখাতের এই ব্যবসায়ী এক সময় এই খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ছিলেন। এছাড়া ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
২০১১ সালের ০১ ডিসেম্বর গঠিত হয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৭
এসএ/এমএসি/এএসআর