‘দুর্বার যৌবন’র প্রসঙ্গে বিদ্রোহী কবি যে বাণী শুনিয়েছিলেন; সে বাণীতেই তরুণদের উদ্দীপ্ত করার প্রচেষ্টা ছিল পোপের কণ্ঠে।
সফরের শেষদিন শনিবার (০২ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নটরডেম কলেজে যুব সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে ভাষণে পোপ বলেন, তোমাদের সঙ্গে যখন সাক্ষাৎ করি তখন মনে হয় যেন আমি যুবক/তরুণ হয়ে গেছি।
তরুণদের সব বাধা দূর করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন পোপ ফ্রান্সিস।
তিনি আহ্বান জানান, আশপাশের পারিবারিক সম্পর্কের প্রতি অমনোযোগী হয়ে ফোনে মত্ত থেকো না। মা-বাবাসহ পরিবারকে সময় দাও। তাদের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করো।
‘‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির স্থাপন করেছে। এ সম্প্রীতিকে অব্যাহত রাখতে সবাইকে সহনশীল হতে হবে। এখানে অনেক মুসলিমও উপস্থিত আছেন। তারাও আমাদের একজন। সবাই-সবার সঙ্গে থাকবো’’।
বয়স্কদের সঠিক মূল্যায়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বয়স্করা আমাদের শিক্ষা দেন। তারা তাদের সঙ্গে বহন করেন স্মৃতি, অভিজ্ঞতা এবং প্রজ্ঞা। যা আমাদের অতীত ভুলের পুনরাবৃত্তি পরিহারে সাহায্য করে।
পৃথিবীটি ক্ষুদ্র, এখানে নিজেদের গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ না করারও আহ্বান ছিল পোপের কণ্ঠে। তিনি এও আহ্বান করেন, ‘আমি ভালো, তুমি খারাপ’ এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
এদিকে তিনদিনের সফর শেষে শনিবার বিকেল ৫টার কিছু পরে ইতালির রোমের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। মিয়ানমার সফর শেষে নেপিদো থেকে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সরাসরি ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন তিনি।
বাকি দুইদিনের মতো সফরের শেষ দিনও (শনিবার) ব্যস্ত সময় পার করেন পোপ। তেজগাঁওয়ে মাদার তেরেসা ভবন পরিদর্শন করেছেন তিনি। এর পরই তেজগাঁও মিশনারি ও কবরস্থান পরিদর্শন করেন। বৈঠক করেন খ্রিস্টধর্মের নেতাদের সঙ্গে। বিকেল সোয়া তিনটায় তিনি নটরডেম কলেজে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান তিনি। সেখান থেকে যান রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে।
তারপর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন পোপ ফ্রান্সিস।
শুক্রবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খ্রিস্টধর্মীয় উপাসনা ও যাজক অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পোপ। বিকেলে ভ্যাটিকান দূতাবাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যোগ দেন আন্তঃধর্মীয় সভায়।
গতবছর প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের ক্যাথলিক বিশপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানালে পোপ চলতি বছরের শেষ দিকে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ আগস্ট এই ধর্মগুরুর ঢাকা সফরের সূচি ঘোষণা হয়।
এর আগে ১৯৮৬ সালে পোপ জন পল এবং ১৯৭০ সালে পোপ ষষ্ঠ পল বাংলাদেশ সফর করেন।
অমনোযোগী হয়ে ফোনে মত্ত থেকো না, তরুণদের পোপ
ঢাকা ছেড়েছেন পোপ
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৭
কেজেড/আইএ