ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বছরের একটি মাসই স্বাচ্ছন্দ্যে চলে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৭
বছরের একটি মাসই স্বাচ্ছন্দ্যে চলে! অগ্রহায়ণে চাশ্রমিক থেকে কৃষিশ্রমিকে পরিণত হন স্বর্ণ তাতী। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: ৮৫ টাকা রোজে চা বাগানে কাজ করে সংসার চালাতে হিমশিম খান চাশ্রমিক স্বর্ণ তাতী। নুন আনতে পান্তা ফুরায় তার। তবে বছরের একটি মাস চা শ্রমিকের পরিচয় ছাপিয়ে হয়ে ওঠেন কৃষিশ্রমিক। দিনে ৪০০ টাকা উপার্জনে স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চলে তার।

কৃষকদের ঘরে ধান তোলার মাস অগ্রহায়ণে ধান কাটার কাজ করেন স্বর্ণ। ওই এক মাসে যে আয় হয়, তা চা বাগানের ছয়মাসের সমান।

এ আয়ে স্ত্রী মনি তাতী এবং দুই সন্তান শ্রীবাস ও গোপালের সকল চাওয়া পূরণ করতে পারেন এই মৌসুমী কৃষিশ্রমিক। বৃদ্ধা মায়ের মুখেও হাসি ফোটে।
 
টানাপড়েনের মাঝেও দুই ছেলেকে লেখাপড়া করিয়ে অনিশ্চয়তার জীবন থেকে মুক্ত করার স্বপ্ন দেখেন স্বর্ণ।  ছবি: বাংলানিউজ টানাপড়েনের মাঝেও দুই ছেলেকে লেখাপড়া করিয়ে অনিশ্চয়তার এ জীবন থেকে মুক্ত করার স্বপ্ন দেখেন স্বর্ণ।

বাড়তি রোজগারের আশায় স্বর্ণের মতো অন্য চাশ্রমিকেরাও এ সময়টাতে ধানের ক্ষেতে নেমে পড়েন।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিরতিঙ্গা চা বাগানের মৃত রবিলাল তাতীর একমাত্র ছেলে স্বর্ণ। বাবা মারা যাওয়ার পর মা চাপাতি তোলার কাজ করে তাকে লালন-পালন করেছেন।

স্বর্ণের বয়স ২৫ ছুঁয়েছে। কিন্তু এখনো বাগানে নিবন্ধিত শ্রমিক হতে পারেননি তিনি। কখনো বেকার থাকেন আর কখনো বিশেষ প্রয়োজনে চা পাতা তুলতে বাগান থেকে ডাক আসে স্বর্ণের।

তবে নিবন্ধিত না হওয়ায় বাইরে কাজ করার সুযোগ পান। কিন্তু বছরের এক মাস শুধু কৃষিকাজ করা সম্ভব হয়। বাকি ১১ মাসই অনিশ্চয়তায় দিনাতিপাত করতে হয় তাকে।

শহরতলীর মাতারকাপন এলাকার কৃষক জাহিদ মিয়ার জমিতে ধান কাটার সময় স্বর্ণ তাতী বাংলানিউজকে বলেন, ‘চা বাগানে কাজ করে সপ্তাহে পাই মাত্র ৫১০ টাকা। আর এখানে কাজ করে দিনেই পাই ৪০০ টাকা। এ সময়টাতে আমাদের চা বাগানে কাজের চাপ কম। বেকার থাকি বলে ধান কাটার কাজ করতে পারি’।

স্বর্ণ বলেন, ‘যারা বাগানের নিবন্ধিত শ্রমিক নন, কেবল তারাই বস্তিতে (বাগানের বাইরে) কাজ করতে পারেন। আমার মতো বেকার অনেকে এ সময় ধান কাটেন। এতে লাভ বেশি। এই এক মাসই সংসার ভালোভাবে চলে’।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।