রোববার (০৩ ডিসেম্বর) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে অনানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন তিনি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘হলি আর্টিজানে হামলার মামলায় এখন পর্যন্ত সোহেল মাহফুজ, রাজিব, রাশেদ, জাহাঙ্গীর, রিগ্যানসহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন’।
‘মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমরা এ বছরেই চার্জশিট দিতে চেয়েছিলাম। তবে কিছু আসামিকে নিযে আমাদের তথ্যগত অভাব ছিল’।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছিলাম, চাপাইনবাবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় নিহতদের মধ্যে বাশারুজ্জামান চকলেট ও ছোট মিজান নিহত হয়েছেন। তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি’।
‘হলি আর্টিজানে হামলার মাস্টারমাইন্ড, ট্রেইনার, অর্থদাতা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতাকারীরা সবাই শনাক্ত হয়েছেন। এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ ৪ আসামির মধ্যে বাশারুজ্জামান চকলেট, ছোট মিজান ও তামিম চৌধুরী নিহত হয়েছেন। অন্যতম পরিকল্পনাকারী সাগর এখনো পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে’।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার তদন্তে তিনজন রিপন, খালিদ ও আকরাম হোসেনের নাম উঠে এসেছে। তাদের মধ্যে আকরাম ছিলেন হলি আর্টিজান ও পান্থপথের হোটেল অলিওতে হামলার অর্থদাতা। রিপন ও খালিদ হলি আর্টিজানে হামলায় সহযোগিতা করেছেন। তারা হামলার পরিকল্পনার বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন। ওই তিনজনকে গ্রেফতার করতে পারলে তদন্ত শেষ হবে’।
‘আর গ্রেফতার করা না গেলে তাদেরকে পলাতক দেখিয়ে এ মাসেই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে। হলি আর্টিজানের ঘটনায় জড়িত নিহতদের ঘটনার সঙ্গে দায়-দায়িত্ব দেখিয়ে অব্যাহতি দেওয়া হবে’।
আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সরকারকে বিপদে ফেলাই এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল উল্লেখ করে সিটিটিসি’র প্রধান আরো বলেন, ‘তবে এ ঘটনায় আইএসএ’র জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। মূল মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী আর সারওয়ার জাহান ছিলেন অন্যতম সহযোগী। জড়িতরা সবাই নব্য জেএমবি’র’।
‘এ সরকারকে যারা চান না, তাদেরও এ জঙ্গি তৎপরতায় মৌন সম্মতি ছিল। তারা নানা বিবৃতি দিয়ে জঙ্গি ইস্যুতে সরকার ব্যর্থ বলে সমালোচনা করেছেন। হলি আর্টিজানসহ সকল হামলার পেছনে রাজনৈতিক চিন্তা রয়েছে’।
তার মতে, ‘সন্ত্রাসবাদ মূলত রাজনৈতিক মতবাদ। নব্য জেএমবি’র সদস্য হিসেবে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই জামায়াত-শিবিবের। তাদের উদ্দেশ্য- দেশে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করা’।
‘নিবন্ধিত অনেক দলও শরিয়া আইন চায়। তবে তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চায়। কিন্তু জঙ্গিরা সরাসরি কথিত জেহাদের মাধ্যমে শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করতে চায়। পথ ভিন্ন হলেও তাদের লক্ষ্য এক’।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৭
পিএম/এএসআর